জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি।।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার একমাত্র ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির অবকাঠামো উন্নয়ন লক্ষ করা গেলেও মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম স্বাস্থ্যসেবার বিন্দুমাত্র উন্নয়ন ঘটেনি।
প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক সংকটের কারনে সাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ব্যাহত উপজেলার আড়াই লক্ষ মানুষ।চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী না থাকায় সেটি এখন রোগীর মত রুগ্ন অবস্থায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ।
১৯৮৩-৮৬ সালে ৬ একর ৪০ শতাংশ জমির ওপর নির্মাণ করা হয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি কাগজে-কলমে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও চিকিৎসক পর্যাপ্ত না থাকায় কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।
জনবল কাঠামোনুযায়ী জুনিয়র কনসালট্যান্ট পদে ১২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৩ জন। এর মধ্যে একজন যোগদান করার পর থেকে আর কর্মস্থলে ফিয়ে আসেননি, মেডিকেল অফিসারের পদ ১৪টি হলেও রয়েছেন মাত্র ২ জন। স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারী পদ ৩২টি থাকলেও রয়েছেন ১৮ জন। পরিছন্নতা কর্মী ৫ জনের মধ্যে ৩ জন কর্মরত থাকলেও মামলার কারণে একজন পলাতক। এর মধ্যে কাজ করেন একজন। পরিছন্নতা কর্মীর সংকটে ল্যাট্রিনগুলোর ভেতরে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা-আবর্জনায় ভরা।এমনকি বছরের পর বছর ধরে এনালগ যন্ত্রপাতি তালাবদ্ধ থাকায় নষ্ট হয়ে পড়েছে।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগির স্বজন প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান,হাসপাতালে রোগীর দীর্ঘ সারি। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা। রোগীরাও অনেক অপেক্ষা করে কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে অন্যত্র সেবা নিতে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রজব আলী জানান,চিকিৎসার জন্য ভর্তি হওয়ার পর জানতে পারি এখানে ডাঃ নেই। চিকিৎসক না থাকায় ৩০ কিঃমিঃ দুরের কুড়িগ্রাম কিংবা লালমনির হাটে যেতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির আউটডোরে প্রতিদিন আড়াইশ থেকে তিনশত রোগীর চিকিৎসা বিঘ্নিত হচ্ছে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে উপস্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র চালু করা হলেও যেখানকার উপস্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে কোনো সহকারী সার্জন বা চিকিৎসক নেই।
এরই মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির দুর্গক্ষযুক্ত ওয়ার্ড পরিস্কার করাকে কেন্দ্র করে কর্মরত চিকিৎসক রোগীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছেন। এলাকাবাসী জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসক ও অন্যান্য পদে দ্রুত জনবল নিয়োগের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি করেন।
মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোছাঃ হোমায়রা পারভীন জানান, আমরা দু’জন মেডিকেল অফিসার স্থানীয় হওয়ায় আমাদের প্রায়দিন ২৪ ঘন্টা ডিউটি করতে হয়। এঅবস্থায় কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত করনে দ্রুত মেডিকেল অফিসার পদায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান ।
ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুমন কান্তি সাহা যুগান্তরকে জানান, চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও ব্যবস্থা হয়নি।