Homeবাংলাদেশচরফ্যাশনে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ

চরফ্যাশনে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ

ভোলা প্রতিনিধি:
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণে আকতার ফরাজী নামের এক বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ লক্ষটাকা চাঁদা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তিনি দু’দফায় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা এবং ২ লক্ষ টাকার বালি ও ইটের খোয়া হাতিয়ে নেন। ওই নেতা শশীভূষণ থানার রসুলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি বলে জানা গেছে।
চাঁদাবাজীর অভিযোগে ভুক্তভোগী আব্দুল জলিল মাঝি মামলা দায়ের করে বিপাকে পড়েছেন। মামলা তুলে নিতে বিএনপি নেতার অব্যহত হুমকি ধামকিতে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন তিনি তার পরিবার।
গতকাল শনিবার সকালে চরফ্যাশন সদরের একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আবদুল জলিল মাঝি।
ব্যবসায়ী জলিল মাঝি অভিযোগ করেন, তিনি শশীভূষণ থানার রসুলপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ব্রিজ ঘাটে মেসার্স রসুলপুর ট্রেডার্স নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইটের খোয়া ও বিভিন্ন ধরনের বালুর ব্যবসা করে আসছেন। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ইটের খোয়া ও বিভিন্ন ধরনের বালু রয়েছে। তিনি সুনামের সহিত ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আকতার ফরাজী ও তার ছেলে তার কাছে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। এতে তিনি রাজি হননি। পরে ক্ষিপ্ত ওই বিএনপি নেতা ও তার ছেলে যুবদল নেতা মো. হাজ্জাজ তার বালুর মাঠ থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ইটের খোয়া ও বালু নিয়ে যান এবং দোকানটি বন্ধ করে দেয়।
নিজের মালিকানাধীন ব্যবসা তাদের জিম্মিদশা থেকে উদ্ধারে নিরুপায় হয়ে তিনি ওই বিএনপি সিনিয়র সহ-সভাপতিকে তার দাবীকৃত টাকা দিতে রাজি হন। পরে গত ১১ সেপ্টেম্বর তিনি আমার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা আদায় করে নেন। এতেই থেমে যাননি তিনি দ্বিতীয় দফায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি ও তার ছেলে হাজ্জাজ তার বাড়িতে গিয়ে আরোও ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন।

আরো পড়ুন:প্রভাব খাটিয়ে মসজিদের জমিতে রাস্তা দাবী


তিনি আরো অভিযোগ করেন, তাদের দাবীকৃত ওই ১০ লক্ষ টাকা দিতে না পেরে তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে অপারগতা প্রকাশ করলেও থেমে যাননি তারা। তাদের অব্যহত হমকি ধামকিতে অসহায় ছিলেন তিনি এবং তার পরিবার। চাঁদার বাকি ১০ লক্ষ টাকার জন্য তাদের অব্যহত হুমকি ধামকিতে তিনি নিরুপায় হয়ে গত বৃহস্পতিবার বিএনপি নেতা আকতার ফরাজী ও তার ছেলে যুবদল নেতা মো. হাজ্জাজকে আসামী করে চরফ্যাসন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দয়ের করেন। মামলা দায়েরের খবর পেয়ে ওই দিন রাতেই বিএনপি নেতা ও তার ছেলে তার ওপর এবং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালান।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, তাদের দাবীকৃত সব টাকা না পেয়ে ওই বিএনপি নেতা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ঘটনা দেখিয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে চলতি বছরের ২৪ আগষ্ট ভোলা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দ্রুত বিচার ট্রইব্যুনালে তাকে আসামী করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তদন্তের জন্য শশীভূষণ থানা পুলিশ তদন্তে গেলে তার দোকান ভাঙচুরের কোন তথ্য প্রমান পাননি। চাঁদাবাজী ও মিথ্যা মামলা থেকে রক্ষা পেতে তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে দাবী জানান।
রসুলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক ইমাম হোসেন রিপন জানান, ভুক্তভোগী আবদুল জলিল মাঝি বিষয়টি আমাকে একাধিকবার জানিয়েছেন। তবে চরফ্যাসনের বিএনপির দু,পক্ষোর টানাপোড়নের কারনে আমি তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোন ব্যবস্থা নিতে পারিনি।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আকতার ফরাজী জানান, আওয়ামী লীগের ক্ষমতার সময়ে আবদুল জলিল মাঝি প্রভাবশীদের ছত্র ছায়ায় থেকে আমাকে একাধিক বার হয়রনি করেছেন। এবং আমার দোকান ভাঙচুর করে মালামাল লুট করে নিয়েছেন। আজ তার সেসব অপকর্মকে আড়াল করতে তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজীর অভিযোগ তুলেছেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট মোহাম্মদ লিটন হাওলাদার জানান, চাঁদাবাজীর অভিযোগে আবদুল জলিল মাঝির দায়ের করা মামলাটি রোববার শুনানির জন্য তারিখ ধার্য রয়েছে।

সর্বশেষ খবর