মিকাইল হোসাইন,পাবিপ্রবি প্রতিনিধি।।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(পাবিপ্রবি) নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আবদুল আওয়াল বরাবর খোলা চিঠি লিখেছেন মেহেদী হাসান মিম নামের এক শিক্ষার্থী । তিনি ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী । সাবেক উপাচার্যদের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে ওই শিক্ষার্থী নতুন ভিসির কাছে অনুরোধ করেছেন, যাতে তিনি দায়িত্ব পালনে অতীতের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নেন।
চিঠিতে ওই শিক্ষার্থী বলেন, বাংলাদেশ এখন নতুন করে স্বপ্ন দেখছে,দেখছে নতুন করে একটি সুন্দর দেশ গড়ার। এই সুন্দর দেশ গড়ার কারিগর হচ্ছে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে, সেই দেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয় এই পাবিপ্রবিতে আপনি নতুন অভিভাবক হয়ে এসেছেন এই নিয়ে আমরা যেমন আনন্দিত সেইসাথে আমরা শঙ্কিত কারণ গত ৮ বছরে তিন ভিসি আমরা পেয়েছিলাম। তারা আসার সময় অনেক কথা বললেও তাদের কথার সাথে কাজের সেইরকম মিল ছিলো না। এইজন্য আপনার জন্য পাবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে বিশ্বাস অর্জন করানো সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং হবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা আপনি তখনই করতে পারবেন যখন আপনি নিজেকে এই পাবিপ্রবি পরিবারের একজন ভেবে কাজ করবেন তাছাড়া অন্যান্য সকলের মতো যাওয়ার বেলা সম্মানটুকু পাবেন না। পাবিপ্রবির অতীত ইতিহাস তাই বলে এইখানে ভিসি হয়ে আসার পর যে সম্মান পাই, সেই সম্মানের সহিত বিদায় নেয়া অনেক কঠিন। এই সম্মান না পাওয়ার কারণ হিসেবে বলবো তারা বিশ্ববিদ্যালয় বান্ধব না হওয়ার জন্য।
বিগত ৩ জন ভিসি নিয়ে একটু স্বরণ করে দিতে চাই।
*আল-নকীব স্যার-যিনি বিশ্ববিদ্যালয়টাকে নষ্ট করে দিয়ে গেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে গেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেছিলেন গ্রীণ হাউজ থেকে।
*রুস্তম আলী স্যার-উনি কিছু কাজ করার চেষ্টা করে গিয়েছিলেন কিন্তু সকল কাজ নিজের মতো করে গেছেন, অনেকটা এক নায়কতন্ত্র কায়েম করেছেন। উনার বিপক্ষে গেলে সেইটা মানতে নারাজ। উনাকে নিয়ে বলা যায় মন্দের ভালো।
*হাফিজা খাতুন ম্যাম- প্রথমত তিনি এসেছিলেন মিলে মিশে ভাগ বাটোয়ারা করতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি স্বৈরাচার দলীয় ছাড়া কিছুই বুঝতেন না, নিজেকে অনেক হেভিওয়েট হিসেবে জাহির করতেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেইভাবে সাজিয়েছিলেন যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা খুবই কম গুরুত্ব পেয়েছে, উনার এই কম সময়ে দলীয়করণ মতে সবচেয়ে নির্যাতিত হয়েছে কিন্তু তিনি চুপচাপ দেখে গেছেন।অনেক কিছু করবো বললেও সেইগুলো শুধু বলেই গেছেন, পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই।
পাবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা এতবার ধোঁকা খাওয়ার পর ভিসি স্যার আপনার প্রতি সহজে বিশ্বাস স্থাপন করবে না সেইটা হয়তো কিছুটা হলেও বুঝবেন। তবে স্যার আমরা আপনাকে আগেই বিশ্বাস করছি না, আপনাকে আমরা বিশ্বাস করবো আপনার এই চার বছরের কর্মকান্ডের ফলাফল দিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬ তম ব্যাচ আসলেও এখন পর্যন্ত আমরা একটিও সমাবর্তন পাই নাই। বাংলাদেশের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এইরকম ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। আপনার কাছে আমাদের প্রথম চাওয়া থাকবে একটি সমাবর্তন এবং বিগত বছরগুলোর মতো শুধু প্রশাসক হিসেবে যারা দ্বায়িত্ব পালন করে গেছে এইরকম পুনরাবৃত্তি আপনার কাছে চাই না। আপনি এই পাবিপ্রবিকে গড়তে আপনার সর্বোচ্চটুকু দিবেন। একটি বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত হয় তখন যখন শিক্ষক তার শিক্ষকতা পেশা ভেবে কাজ করেন। আমরা শুধু নামে মাত্র শিক্ষক চাই না, আমরা আদর্শবান শিক্ষক চাই। যেইসব শিক্ষক হবে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে বিশস্ত বন্ধু। পাবিপ্রবিতে আমরা শুধু হতাশা বাড়াতে চাই না, এইখানে সবাই আনন্দের সহিত আসলেও যাওয়ার সময় শুধু নিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বুকভরা অভিমান।
পরিশেষে বলতে চাই আপনি বলেছিলেন আপনাকে প্রথম দিন যেনো কেউ ফুল দিয়ে বরণ না করে। তবে আপনার শেষ কর্মদিবসে আপনার কর্মকাণ্ডের জন্য পাবিপ্রবির সকলেই আপনাকে যেনো ফুলের মালা দিয়ে বিদায় দিতে পারে