ব্যথা-বেদনাহীন মৃত্যু যন্ত্র সুইসাইড পড প্রথমবারের মত ব্যবহার করা হলো সুইজারল্যান্ডে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ওই যন্ত্রের সাহায্যে স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করেছেন ৬৪ বছর বয়সি এক আমেরিকান বৃদ্ধা।
এক মিনিটেরও কম সময়ে ব্যথা-বেদনাহীন শান্তির মৃত্যু ঘটে এই যন্ত্রের মাধ্যমে। সোমবার এমন এক স্বেচ্ছামৃত্যুর ঘটনায় সুইস পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন চার ব্যক্তি।
সুইজারল্যান্ডে -জার্মানির সীমান্তবর্তী শ্যাফহাউসেনের পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার এলাকার এক মাঠে বসানো হয়েছিল ওই যন্ত্রটি। সেখানেই ‘সুইসাইড পড’টি প্রথম বারের জন্য ব্যবহার করা হয়। এর পরেই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া এবং সহায়তার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন চার জন। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন ওই যন্ত্র প্রস্তুতকারী সংস্থার সহ-সভাপতি ফ্লোরিয়ান উইলেট, এক জন ডাচ সাংবাদিক এবং দুই সুইস নাগরিক। অভিযোগ করা হয়েছে, ওই বৃদ্ধার মৃত্যুর সময়ে একমাত্র ফ্লোরিয়ানই সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সুইজারল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রী এলিজাবেথ বাউমে-শ্লেইডার সোমবার জানিয়েছেন, এই যন্ত্রটি পণ্য সুরক্ষা আইনের প্রয়োজনীয় শর্তগুলি পূরণ করে না। তা ছাড়া ওই যন্ত্রে নাইট্রোজেনের ব্যবহারও আইনসম্মত নয়।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ‘সুইসাইড পড’ প্রস্তুতকারী সংস্থা। তাদের দাবি, ওই যন্ত্র ব্যবহারে তাদের আগেই আইনি ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল।
‘সুইসাইড পড’ গোলাকার কফিন আকৃতির একটি যন্ত্র। ২০১৯ সালে যন্ত্রটির প্রাথমিক প্রোটোটাইপ তৈরি হয়। এর পর ২০২১ সালে ব্যবহারে আইনি ছাড়পত্র পায় সুইসাইড পড। ছোট্ট ক্যাপসুলের মতো দেখতে এই যন্ত্রটি বহনযোগ্য।
মূল মেশিন থেকে বিচ্ছিন্ন করলে একে দেখতে লাগে খানিকটা কফিনের মতো। সেই কফিনে একবার শুয়ে পড়লেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ব্যবহারকারী। যন্ত্রটিতে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে। কফিনে ঢুকে আত্মহত্যায় ইচ্ছুক ব্যক্তি একটি বোতাম টিপলেই নাইট্রোজেনে পূর্ণ হয় ক্যাপসুলটির ভেতর। এতে প্রথমে অক্সিজেন কমে আসায় অস্বস্তি বোধ করলেও ধীরে ধীরে জ্ঞান হারান ওই ব্যক্তি। এরপর কিছু ক্ষণের মধ্যেই মারা যান ওই ব্যক্তি।