বয়স তিরিশের আশপাশে গেলেই ইদানীং চুল পাকতে দেখা যায়। চিকিৎসকেরা বলছেন, মিলেনিয়ালস (১৯৮১-১৯৯৬ সালের মধ্যে জন্মেছেন যারা) এবং জেন জেডদের (১৯৯৭-২০১২ সালের মধ্যে জন্ম যাদের) মধ্যে এই চুলে পাক ধরার সমস্যা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। বিশেষ করে এশীয়দের মধ্যে দেখা যাচ্ছে ২৫ বছরের পর থেকেই চুল পাকতে শুরু করছে।
কারণ কী?
চুল পাকার কারণ হিসেবে তিনটি বিষয়কে দায়ী করেছেন নয়াদিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালের ত্বক বিশেজ্ঞ ডিএম মহাজন।
তার কথায়, ‘‘৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে চুল পাকে জিনগত কারণে। বাকিদের ক্ষেত্রে পরিবেশ একটা বড় কারণ। অতিবেগুনি রশ্মির বিকীরণ, দূষণের জন্যও চুল পাকে। আবার দৈনন্দিন জীবনের মানসিক চাপও চুল পাকার কারণ হতে পারে। ’’
দিল্লিরই আরও একটি বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রের ত্বকের চিকিৎসা বিভাগের প্রধান চিকিৎসক শিতজি গোয়েল বলছেন, ‘‘আধুনিক জীবনযাত্রায় খাওয়াদাওয়ার মান খারাপ হয়েছে। তার উপরে ধূমপান, মদ্যপানের মতো বদভ্যাসের কারণেও চুল পাকে। ধূমপান, মদ্যপানের ফলে আমাদের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বৃদ্ধি পায় এবং তা থেকেই চুলের রং বদলায়। ’’
এ ছাড়া কয়েকটি ক্ষেত্রে পুষ্টির ঘাটতি, ঘুমের ঘাটতি,বিশ্রামের অভাব, থাইরয়েডের সমস্যা-সহ কিছু রোগের কারণেও চুল পাকতে পারে। মোট কথা, জিনগত কারণ না থাকলে জীবনযাত্রার ধরনই চুলের অকালপক্কতার কারণ।
সমাধান কি?
চিকিৎসক গোয়েল বলছেন, অল্প বয়সে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা আটকানো সম্ভব। তবে পাকা চুলকে আগের অবস্থায় পুরোপুরি ফেরানো সম্ভব নয়। তার জন্য মাথায় রাখতে হবে কয়েকটি বিষয়— এক, পুষ্টির ঘাটতি দুই, থাইরয়েডের সমস্যা তিন, মানসিক চাপ।
রক্তে আয়রন, কপার, ভিটামিন বি১২-এর অভাবে চুল অকালে পাকতে পারে। কিসের অভাব হচ্ছে, তা জানতে প্রথমেই রক্তপরীক্ষা করা দরকার। এ-ও জানা দরকার হরমোনের সমস্যার জন্য চুল পাকছে কি না। এক বার কারণ জানা গেলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা যায়। একই সঙ্গে বদলাতে হবে খাদ্যাভ্যাসও।
ঘরোয়া উপায়
ঘরোয়া কিছু টোটকা ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন, আমলকি এবং মেহেন্দির ব্যবহার অনেক সময়েই চুলকে কালো রাখতে সাহায্য করে। তবে এই সব কাজ করবে তখন, যখন সার্বিক জীবনযাত্রার ধরণ বদলানো সম্ভব হবে।