জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থাই সরকারকে দানবে পরিণত করে। সংবিধানে সরকারপ্রধানকে অপরিসীম ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এতে ভালো নির্বাচনে জয়ী হয়ে জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দলও ক্ষমতার অপর্যবহার করে দানবে পরিণত হয়ে যায়। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা চাই, দেশের মালিকানা যেন সাধারণ মানুষের হাতে থাকে। সাধারণ মানুষ যেন ইচ্ছে অনুযায়ী তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। সরকারের জবাবদিহি থাকবে সাধারণ মানুষের কাছে। সরকার যদি জনগণের ইচ্ছের বাইরে দেশ পরিচালনা করে, তাহলে পরবর্তী নির্বাচনে যেন সাধারণ জনগণ আবারও ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার পরিবর্তন করতে পারে।
শনিবার দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টি সব সময় জনগণের ইচ্ছে অনুযায়ী রাজনীতি করেছে। জনগণের পক্ষে থেকেই জানগণের পক্ষে রাজনীতি করেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন জাতীয় পার্টি বর্জন করেছিল।
তখন আওয়ামী লীগ সরকার পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে চিকিৎসার নামে আটক করে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিই। তখন আমার নেতৃত্বে প্রায় ২৭০ জন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। আমি নিজেও ২০১৪ সালের নির্বাচন করিনি, সংসদে যাইনি।
তিনি বলেন, মঞ্জুর হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন চাপ দিয়ে আমাদের নেতাকে নিজস্ব রাজনীতি করতে বাধা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি না গেলেও উপজেলা নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের অনেক নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। আবার ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল। বিএনপির সংসদ সদস্যরা প্রায় চার বছর সংসদে থেকে তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন।
কিন্তু ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমরা যেতে চাইনি। সবাই জানে আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। জাতীয় পার্টিকে দুটি ভাগ করে রেখেছিল সরকার। একটি ঠুনকো মামলার আদেশে প্রায় চার মাস আমাকে দল পরিচালনা থেকে বিরত রেখেছে। আমাদের দলের পরিচয়ে সরকার আরেকটি গ্রুপকে কাউন্সিল করতে দিয়েছিল। আমাদের রাজনীতি ও দল পরিচালনায় অনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছিল আওয়ামী লীগ।
জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. ফরিদ উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে মতবিনিময়সভায় উপস্থিত ছিলেন পার্টির মহাসচিব বীর মুত্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু, অ্যাডভোকেট বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন, অ্যাডভোকেট ড. নুরুল আজহার শামীম, অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ ভাসানী, অ্যাডভোকেট ইউসুফ আজগর, অ্যাড. আব্দুর রশীদ, অ্যাডভোকেট জিন্নাত আলী, অ্যাডভোকেট আবুল হাসনাত মাসুম, অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম মোল্লা, অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট মো. মেহেদী হাসান ও অ্যাডভোকেট আবু ওহাব।