শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি।।
বগুড়ার শেরপুরে একজন ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার চেয়ে বৃহষ্পতিবার ওই ইউনিয়ন পরিষদের ৮ জন সদস্য উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত মোঃ আবুল কালাম আজাদ শেরপুর উপজেলার শাহ-বন্দেগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। তিনি স্থানীয় বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামীর রাজনীতির সাথে যুক্ত। গত ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় দফার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে তিনি জয় লাভ করেন। এরপর থেকেই স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ করে আসাছিলেন ইউপি সদস্যরা। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ট হওয়ার কারনে তারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে পারেননি। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থতিতে ৮ জন ইউপি সদস্য এই লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ভূমি হস্তান্তর বাবদ ১ শতাংশ রাজস্ব পেয়ে থাকে ইউনিয়ন পরিষদ। এই খাতে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৮ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩২ লক্ষ ৭৯ হাজার ৮০০ টাকা, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৯ লক্ষ ৮ হাজার টাকা আয় করেছে ইউনিয়ন পরিষদ। এছাড়াও ওই ৩ অর্থবছরে বসতবাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স ও ব্যবসা-বাণিজ্য ট্যাক্সসহ প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে। কিন্তু এসব টাকা জনকল্যাণে ব্যয় না করে চেয়ারম্যান ও সচিব আত্মসাৎ করেছে। উপরন্তু গত ১৩ মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের সম্মানী ভাতা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
অন্যতম অভিযোগকারি শাহবন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি নিজেও একজন জামাতে ইসলামের রুকন। চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথে গাঁটছড়া বেধ লুটপাট করেছেন। আমরা ইউপি সদস্যরা প্রতিবাদ করলে এমনকি প্রাণনাশের হুমকী পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।“
এ বিষয়ে শাহবন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন,”ইউনিয়ন পরিষদের সকল টাকা বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় করা হয়েছে। আর অভিযোগকারীরাও এসব প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন। তবে তাদের ১৩ মাসের সন্মানী ভাতা বাকি আছে। আমি সেগুলো পরিশোধের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছি। কিন্তু ব্যক্তি আক্রশের কারণে তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।“
অভিযোগের বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন জিহাদী বলেন,”সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করার জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।“