নড়াইলে পাষণ্ড সৎ মায়ের হাতে চার বছরের এক শিশু খুন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাশেদুল নামে শিশুটিকে তার সৎ মা রহিমা প্রতিহিংসার কারণে শ্বাসরোধে খুন করে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের।
নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজন ও এলাকাবাসী এ বর্বরতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত সৎ মাসহ দুইজনকে পুলিশ তৎক্ষণাৎ আটক করেছে। আরও কেউ জড়িত কিনা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে বলে জানিয়েছে।
এদিকে একমাত্র শিশু সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বাবা আব্দুর রহিম। তার বুকফাটা আর্তনাদ আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে মির্জাপুর পশ্চিমপাড়ার পরিবেশ।
পুলিশও স্বজনরা জানায়, স্বামী রহিমের সঙ্গে বনিবনা না হওয়া দুধের শিশুসন্তান রাশেদুলকে ফেলে তার মা ফারিয়া আড়াই বছর আগে চলে গিয়ে অন্যত্র বিয়ে করে ঘর বাঁধে। রাশেদুলকে ফেলে তার মা ফারিয়া চলে গেলে শিশু রাশেদুল তার দাদা দাদীর আশ্রয়ে পালিত হতে থাকে।
পরে পরে রহিমাকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে আব্দুর রহিম। রহিমের সংসারে আসার পর থেকেই সে রাশেদুলকে কুনজরে দেখতো হিংসা করতো। এরই এক পর্যায়ে ১৬ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকালে রাশেদুল নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে এদিন গভীর রাতে বাড়ির পাশের ডোবা থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপরই সবার সন্দেহ রাশেদুলের সৎমা রহিমার উপর গিয়ে পড়ে।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদে রাশেদুলকে হত্যার কথা প্রথমে অস্বীকার করলেও এক পর্যায়ে প্রতিহিংসার বশে তার জায়া রুমার সহযোগিতায় রাশেদুলকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ ডোবায় ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করে রহিমা। তার স্বীকারোক্তির পরেই তাকে আটকে রেখে পুলিশে দেয় নিহত রাশেদুলের পরিবার ও এলাকার লোকজন।
সোমবার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনগত প্রকৃয়া শেষে রাশেদুলের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। স্বজনরা এ নির্মম হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, রাশেদুলের মৃতদেহের গলায় নখের আঁচড়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে, রহিমা তার জায়া রুমার সহযোগিতায় রাশেদুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।