বয়স মাত্র ১৪ বছর। তবে তার প্রতিভা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। সে প্রতিভার জোরেই এ বয়সে লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ, জর্দি আলবা, মার্কো রয়েসদের মতো তারকাদের লিগে খেলছেন তিনি। বছর তিনেক পরে এ বিস্ময় বালক খেলবেন বিশ্বের অন্যতম সেরা লিগেও। তাকে আগেভাগেই দলে ভিড়িয়ে নিয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটি। বলছি, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মিডফিল্ডার কাভান সুলিভানের কথা।
বর্তমানে কাভান খেলছেন মেজর সকার লিগের (এমএলএস) ক্লাব ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়নে। যুক্তরাষ্ট্রের লিগটির ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে গত জুলাইয়ে অভিষেক হয়েছিল তার। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) তার দল মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসির দল ইন্টার মায়ামির বিপক্ষে। ম্যাচটি ৩-১ ব্যবধানে হেরে যায় ফিলাডেলফিয়া। স্কোয়াডে থাকলেও অবশ্য মাঠে নামা হয়নি তরুণ কাভানের। বেঞ্চে বসেই কেটেছে তার পুরোটা সময়।
তবে ম্যাচ শেষে নিজের আইডলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ভুলেননি তিনি। হাতছাড়া করেননি আর্জেন্টাইন তারকার সঙ্গে ফ্রেমবন্দি হওয়ার সুযোগটিও । মেসি সম্পর্কে কাভান বলেন, ‘নিজের আইডলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারাটা ছিল বড় সম্মানের।’
দুজনকে নিয়ে মজার একটি তথ্য প্রকাশ করেছেন ইতালিয়ান ফুটবল বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিক ফ্যাব্রিজিও রোমানো। কাভানের যখন জন্ম, সে সময় পেশাদার ফুটবলে ১০০তম গোলটি করেছিলেন মেসি। ২০০৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সুলিভানের জন্ম। পরের দিন শততম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন মেসি।
যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেয়া কাভানের আছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির নাগরিকত্ব। তবে তার গায়ে কিছুটা বইছে বাংলাদেশি রক্তও। কীভাবে? কাভানের বাবা ব্রেন্ডন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হলেও মা হেইকি একজন জার্মান। আর মায়ের দিক থেকেই কাভানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক। কাভানের মা হেইকির বাবা ছিলেন বিখ্যাত জার্মান অধ্যাপক ও কমিউনিকেশন স্কলার ক্লাস ক্রিপেন্ডর্ফ। হেইকির মা একজন বাংলাদেশি; ডক্টর সুলতানা আলম। ১৯৭১ এর মুক্তযুদ্ধে অবদান রাখা সুলতানা ফিলাডেলফিয়ায় পিএইচ.ডি করতে গিয়ে পরিচিত হন কাভানের দাদা ক্রিপেন্ডর্ফের সঙ্গে। সেখান থেকেই পরিচয় ও প্রণয়। পরবর্তীতে তারা সংসার পাতেন।
কাভানের গোটা পরিবারই অবশ্য ফুটবল পাগল। মা হেইকি খেলেছেন ডিভিশন ওয়ান সকারে। এমনকি ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার নারী সকার দলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। আর বাবা ব্রেন্ডন তো ছিলেন পেশাদার ফুটবলার। ছয় বছরের ক্যারিয়ারে এ-লিগে পাঁচটি ক্লাবের হয়ে খেলেছেন ব্রেন্ডন।
কাভানের বড় ভাই কুইন সুলিভানও ফুটবল খেলেন। ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়নে খেলা কুইন নিজেও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সেরা তরুণ ফুটবল প্রতিভা। যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী বড় তারকা হিসেবেই তাকে ধরা হচ্ছে। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই ক্লাবের মূল একাদশে জায়গা পাকা করে ফেলেছেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। তার দিকেও নজর ইউরোপের জায়ান্ট ক্লাবগুলোর। কাভান ও কুইনের ছোট দুই যমজ ভাই রোনান ও ডেক্লানও ফুটবলার হওয়ার পথেই আছেন।