আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে দেশের মানুষের উদ্দেশে দেওয়া এক বাণীতে তারেক রহমান বলেছেন, ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমাদের রাষ্ট্র মেরামতের ভিত্তি হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন; বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের সকল মূলনীতির প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োগ।
তিনি এই দিবসের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, গণতন্ত্র এবং এর অন্তর্নিহিত শক্তি উপলব্ধি করতে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য ২০০৭ সাল থেকে প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর প্রচলিত একটি বিশেষ দিন আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
আত্মদানকারী শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের সমবেদনা জানাচ্ছি।
তিনি বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় শহীদ জিয়ার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কালজয়ী দর্শন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মর্মমূলে ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র-যার ভিত্তি ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার। এই চিন্তা ও দর্শনকে আপোষহীন সংগ্রামের নিরবচ্ছিন্ন পথচলায় অগ্রগামী করেছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গণ-আকাঙ্খায় প্রতিষ্ঠিত সেই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে বারবার হিংস্র আক্রমণে নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী শাসকরা বহুমাত্রিক গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে। দেড় দশক ধরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবিরাম সংগ্রামের পটভূমির ওপরে গত জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার দুনিয়া কাঁপানো গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগষ্ট ইতিহাসের জঘন্যতম স্বৈরশাসনের পতন ঘটে।
তিনি বলেন তথ্য-প্রযুক্তির প্রসার এবং দেশে এর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, এ বছরের আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের মূল প্রতিপাদ্য: ‘Artificial Intelligence as a tool for good governance’, তথা সুশাসনের জন্য একটি উপকরণ হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার। এই থিম অত্যন্ত সময়োপযোগী। আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হলে প্রযুক্তির উৎকর্ষতাকে অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে।
তারেক রহমান পতিত হাসিনা সরকারের আমলে মানুষের ভোটাধিকার ও নির্বাচন নিয়ে বলেন, ‘বিগত ১৬/১৭ বছরে কোটি কোটি ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেয়া হয়নি। ভুয়া ভোটের জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচন করা হয়েছে। দেশের কোটি কোটি ভোটার অর্থবহ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। দেশের কয়েক প্রজন্ম গণতান্ত্রিক অধিকারের চর্চা ও প্রয়োগ ছাড়াই একটি ভীতিকর ও কর্তৃত্ববাদী পরিবেশে বেড়ে উঠেছে। ‘
তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি ও আমার দল বিশ্বাস করে গণতন্ত্রের নীতিগুলো প্রচার ও সমুন্নত রাখার কোন বিকল্প নেই। কারণ গণতন্ত্র হচ্ছে সর্বজনীন মূল্যবোধ যা জনগণের স্বাধীন ভাব প্রকাশ ও বাধাহীন চিন্তা প্রকাশের স্বীকৃতি প্রদান করে। আমরা এ ধরণের একটি নিরাপদ, প্রগতিশীল এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সংকল্পবদ্ধ, যা রাষ্ট্রীয় সীমানা অতিক্রম করে বৈশ্বিক গণতান্ত্রিক বিকাশে ভূমিকা রাখবে।
সবশেষে তিনি দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে বলেন। তিনি বলেন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, যেখানে নিশ্চিত হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সমৃদ্ধি ও স্বনির্ভরতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উদার রাজনৈতিক পরিবেশ এবং সামাজিক স্থিতি ও ন্যায়পরায়ণতা।