কয়েক দশক ধরে দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের বৃহত্তম “শিশু রপ্তানিকারক” হিসাবে পরিচিত। দেশটি যুদ্ধে বিধ্বস্ত হওয়ার পরে কয়েক হাজার শিশুকে বিদেশে পাঠিয়েছিল। এই দত্তক নেওয়া শিশুদের মধ্যে অনেকেই এখন তাদের শেকড় খুজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন। একইসঙ্গে তারা অভিযোগ এনেছেন, তাদেরকে মায়ের কাছ থেকে জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
যুদ্ধে বিধ্বস্ত হওয়ার পরে কয়েক হাজার শিশুকে বিদেশে পাঠিয়েছিল দক্ষিন কোরিয়া। এসব শিশুদের বেশিরভাগই এখন প্রাপ্তবয়স্ক। তারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। তাদেরকে বিদেশে দত্তক দেওয়া এজেন্সিগুলির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ এনেছেন তারা। শুধু তাই নয় কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদেরকে জোরপূর্বক তাদের পরিবার থেকে পৃথক করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
এই সপ্তাহের শুরুতে কোরিয়ান সরকারী কমিশন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যে প্রতিবেদনে শেকড় খুজে চলা মানুষদের দাবিগুলিকে সমর্থন করা হয়েছে। এবং একইসঙ্গে তাদের দাবির সপক্ষে তারা প্রমাণ ও দেখিয়েছে।
ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনকে ২০২২ সালে এই অভিযোগের তদন্ত করতে দেওয়া হয়। তদন্তে তারা দেখেছে, ১৯৮০ সালের দিকে বেশ কয়েকটি সরকারি অর্থায়নে চলা প্রতিষ্ঠান এক ডজনেরও বেশি শিশুকে জোরপূর্বক দত্তক সংস্থার কাছে নিয়ে গিয়েছিল। এসব শিশুদের কখনও কখনও জন্মের দিন বা পরের দিন দত্তক সংস্থার কাছে দিয়ে আসা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
দায়েগু এবং সেজং শহরে তিনটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ১৯৮৫ এবং ১৯৮৬ সালে মোট ২০ টি শিশুকে তারা দত্তক নেওয়া সংস্থাগুলিতে স্থানান্তর করেছিল। এই শিশুদের বেশিরভাগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে এবং ডেনমার্কে দত্তক দেওয়া হয়েছিল।
ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন একটি বিবৃতিতে সিএনএনকে বলেছে, প্রতিষ্ঠানগুলো জোরপূর্বক সন্তানদের তাদের পিতা-মাতা থেকে আলাদা করেছিল। এই বিষয়ে কমিশন এখনও তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে। তদন্ত শেষে এই বছরের শেষের দিকে একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।