২০০২ বিশ্বকাপে শেষবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল। সেবার রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতেছিল ব্রাজিল। এরপর থেকে শুধুই হতাশাই সঙ্গী হয়েছে সেলেসাওদের। এর পরের পাঁচ আসরে মাত্র একবারই কোয়ার্টার ফাইনাল পার হতে পেয়েছে ব্রাজিল। ঘরের মাঠে সেবার অবশ্য জার্মানির বিপক্ষে ৭ গোল খেয়ে যাত্রা থেমেছিল তাদের। এইসব হতাশা পেছনে ফেলে পরবর্তী বিশ্বকাপের জন্য বাছাই পর্বে লড়ছে ব্রাজিল।
গত দুই বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও বাছাই পর্বে দুর্দান্ত ছিল ব্রাজিল। গতবার তো বাছাই পর্বে অপরাজিত থেকেই বিশ্বকাপে খেলতে গিয়েছিলেন নেইমার, ভিনিসিউসরা। কিন্তু ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে বেহাল দশা সেলেসাওদের। ৭ ম্যাচ শেষে মাত্র ৩টি ম্যায়ে জয় পেয়েছে তারা। হেরেছেও সমান ম্যাচে। ৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার চারে আছে ব্রাজিল।
ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ড্র করার পর টানা তিন ম্যাচে কলম্বিয়া, উরুগুয়ে এবং আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হেরেছে ব্রাজিল। অবশেষে গত ম্যাচে রদ্রিগোর একমাত্র গোলে ইকুয়েডরকে হারিয়ে চার ম্যাচ পর জয়ের দেখা পেয়েছে ব্রাজিল।
ব্রাজিলের এমন বাজে পারফরম্যান্সের পেছনে অনেকেই নেইমারের অনুপস্থিতিকে কারণ হিসেবে দেখছেন। গত অক্টোবরে বাছাই পর্বে উরুগুয়ের বিপক্ষে আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন নেইমার। এরপর থেকেই মাঠের বাইরে আছেন গত এক দশকের বেশি সময় ব্রাজিলকে টেনে নেয়া এই তারকা।
ইকুয়েডরকে হারিয়ে ব্রাজিলকে জয়ের ধারায় ফেরানো রদ্রিগো তো মনে করেন, ২০২৬ বিশ্বকাপ জিততে হলে ব্রাজিলের নেইমারকে লাগবেই। ২৩ বছর বয়সী ঋয়াল মাদ্রিদ তারকার চোখে নেইমারই ব্রাজিলের সাফল্যের চাবিকাঠি।
ইএসপিএন ব্রাজিলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রদ্রিগো বলেন, সে আমাদের তারকা, আমাদের সেরা খেলোয়াড়। সবাই দেখতে পারছেন, তাকে কী পরিমাণ মিস করছি আমরা। সুস্থ নেইমারকে পাওয়া, যেটা আমারা সবাই চাই, (এবং) সে সেরে ওঠার শেষ ধাপে আছে। আমরা তাকে যত দ্রুত সম্ভব ফিরে পেতে চাই।’
গত ২ নভেম্বর নেইমারের এন্টেরিয়র ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট ও মেনিস্কাসের চোট সারানোর জন্য অস্ত্রোপচার করা হয়। এখন সেরে ওঠার শেষ ধাপে আছেন তিনি। ফিফার আগামী আন্তর্জাতিক উইন্ডোর আগেই নেইমার মাঠে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বার্সেলোনা ও প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ে ক্যারিয়ারের সেরা সময় কাটিয়ে গত বছর ৯০ মিলিয়ন ইউরো ট্রান্সফার ফি’র বিনিময়ে সৌদি প্রো লিগের দল আল হিলালে যোগ দেন নেইমার। কিন্তু নতুন ক্লাবের হয়ে মাত্র ৩টি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছে তার।
রদ্রিগো জানান, তিনি সবসময় নেইমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। আকে নিজের আদর্শ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন।
রদ্রিগো বলেন, ‘আমরা একে অন্যকে বার্তা দেই। সেই এই মুহূর্তে তার দলের সঙ্গে অনুশীলনে ফিরেছে। সে একজ দারুণ সতীর্থ। আমার খুব দুঃখ হয় যখন কেউ তাকে নিয়ে বাজে কথা বলে, কারণ সে তেমন মানুষ নয়। সে সবসময় আমাকে বার্তা দেয়, আমাকে সাহায্য করে। আমি তাকে ভালবাসি। আমার আদর্শ জন্যই শুধু নয়, একজন ব্যক্তি হিসেবে সে নিজেকে যেভাবে উপস্থাপন করে তাতে একজন চমৎকার মানুষ সে।’
আগামীকাল বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) ফের বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলতে মাঠে নামছে ব্রাজিল। আসুনসিয়নে তাদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক প্যারাগুয়ে।