Homeখেলাআয়ারল্যান্ডে বিরুপ অভিজ্ঞতার শিকার গ্রিলিশ-রাইস

আয়ারল্যান্ডে বিরুপ অভিজ্ঞতার শিকার গ্রিলিশ-রাইস

ডাবলিনে শনিবার আয়ারল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে উয়েফা নেশন্স লিগের অভিযান শুরু করে ইংল্যান্ড। তবে সেখানে খেলতে গিয়ে বিরুপ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন জ্যাক গ্রিলিশ ও রাইস। ম্যাচের শুরু থেকেই দর্শকদের দুয়ো শুনতে হয়েছে এই দুই ফুটবলারকে। যত সময় বল ছিল তাদের পায়ে, গ্যালারি থেকে ভেসে এসেছে একই সুর। তবুও দর্শকদের নিয়ে বাজে কোনও কথা বলতে চান না তারা।

পুরো ম্যাচেই দর্শকদের দুয়ো শুনতে হয়েছে, তবুও তারা খুশি। তাদের এই খুশির কারণ দলের জয় ও নিজেদের পারফরম্যান্স। দর্শকদের এমন দুয়োর মধ্যেই দুটি গোল করেছেন গ্রিলিশ ও রাইস। তাদের গোলেই ২-০ ব্যবধানে জয় পায় ইংল্যান্ড। পারফরম্যান্সের পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডের দর্শকদের প্রতিক্রিয়ায় তারা একটুও বিরক্ত হননি।

ইংলিশ এই দুই ফুটবলারের প্রতি আয়ারল্যান্ডের দর্শকদের এতো ক্ষোভ কেন? কারণ দুজনেই লম্বা সময় ধরে খেলেছেন আয়ারল্যান্ডে। রাইসের জন্ম লন্ডনে হলেও তার শেকড় আয়ারল্যান্ডে। দাদা-দাদির সূত্রে আয়ারল্যান্ডে খেলার যোগ্য ছিলেন এই মিডফিল্ডার। ক্লাব ফুটবলে ওয়েস্ট হ্যামে খেললেও ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২১ দলে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এমনকি আয়ারল্যান্ডের জাতীয় দলের হয়েও তিনটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন এই ফুটবলার। এরমধ্যে দুটি ম্যাচ ছিল বিশ্বকাপ বাছাই।

২০১৮ সালে ইংল্যান্ড দলে খেলার প্রস্তাব পান রাইস। আয়ারল্যান্ডের তখনকার কোচ মার্টিন ও’নিল তাকে তখন দল থেকে বাদ দেন। সে কারণে পরে তিনি চলে যান ইংল্যান্ডে। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের জার্সিতে তার অভিষেক হয়।

আরেক ইংলিশ তারকা জ্যাক গ্রিলিশের গল্পটাও অনেকটা একইরকম। তার দাদা, নানা, নানি সবাই আইরিশ। ক্লাব ফুটবলে তখন অ্যাস্টন ভিলায় খেললেও বংশ পরিচয়ের সুবাদে আয়ারল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৭, অনূর্ধ্ব-১৮, অনূর্ধ্ব-২১ দলে তিনি খেলেছেন। রাইসের মতো অবশ্য জাতীয় দলে কখনও খেলা হয়নি তার। তবে জাতীয় দলে খেলার প্রস্তাব পেয়েছিলেন। বয়সভিত্তিক দলগুলোতে খেলার সময় তিনি বলেছিলেন ভবিষ্যতে তিনি আয়ারল্যান্ড জাতীয় দলেই খেলবেন। কিন্তু পরে তিনি বেছে নেন ইংল্যান্ডকেই।

এই দুজনেই দর্শকদের এমন আচরণ মেনে নিয়েছেন। আয়ারল্যান্ডের প্রতি ভালবাসার কথাও জানালেন রাইস। ‘আমার দাদা-দাদি, বাবার দিকেই পরিবারের সবাই আইরিশ। তারা কেউ এখন বেঁচে নেই এবং এখানে আর নেই। আমার তাই মনে হয়েছিল, উদযাপন করাটা অসম্মানজনক। এজন্যই তা করতে চাইনি।’

‘আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলার দিনগুলোতে অসাধারণ সময় কেটেছে আমার। জাতীয় দলে, অনূর্ধ্ব-১৯, অনূর্ধ্ব-২১ দলে খেলা দারুণ সব স্মৃতি এখনও হৃদয়ে লালন করি। তাদের প্রতি একটি বাজে শব্দও বলার নেই আমার। তাদের প্রতি আমার শুভ কামনা থাকবে সবসময়।’

গ্রিলিশ জানিয়েছেন, ‘আমি ও ডেক্লান রাইস এমন কিছুই আশা করছিলাম। বাজে কোনও কিছুই বলার নেই আমাদের। আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলার সময়টুকু আমরা দুজনেই উপভোগ করেছি। আমি তো অবশ্যই উপভোগ করেছি এবং আমার পরিবারেও অনেক আইরিশ আছেন। আমার দিক থেকে তাই বিন্দুমাত্র বিদ্বেষ নেই।’

Exit mobile version