মেজর জেনারেল (অব) ড. মনিরুল ইসলাম আখন্দকে ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। চার বছর পর অধ্যক্ষকে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় উচ্ছ্বসিত কলেজ ছাত্রীরা বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে ফুল দিয়ে তাকে বরণ করে নেন।
মনিরুল ইসলাম আখন্দ বলেন, আমরা একটা সুন্দর ক্যাম্পাস গড়ে তুলব। রাজনীতি, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত একটা কলেজ গড়ে তুলবো।
আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমার ছাত্রীরা। লেখাপড়ার পাশাপাশি ছাত্রীদের দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলব।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা বাঁধা দিয়ে থাকলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রীদের কোনো ভয় নেই, আমি তাদের অভিভাবক হিসেবে পাশে আছি। পাশাপাশি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা শিক্ষকদের বেতন চালুর দ্রুত ব্যবস্থা করা হবে।
ওই কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রীরা জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকায় অধ্যক্ষের পদ ছাড়তে হয় তাকে।
সরকার পতনের পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবার তাকে ফিরিয়ে আনার দাবি তোলে। ছাত্রীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ৩ সেপ্টেম্বর মেজর জেনারেল (অব) মনিরুল ইসলাম আখন্দকে চেয়ারম্যান, প্রফেসর ড. মো. রবিউল ইসলামকে বিদ্যোৎসাহী সদস্য করে ৫ সদস্যের একটি এডহক কমিটি গঠন করে।
কলেজের গভর্নিং বডির নতুন চেয়ারম্যানকে নিয়ে আশাবাদী শিক্ষক ও ছাত্রীরা। স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ফারিয়া আহমেদ ফারহা বলেন, স্যার যখন অধ্যক্ষ ছিলেন, আমরা নিরাপদ খাবার পানি, সুশৃঙ্খল শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষক ও ছাত্রীদের যথাসময়ে উপস্থিতি, বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা, কোচিং ব্যবসা থেকে শুরু করে সব সমস্যার সমাধান হয়েছিল। উনি যাবার পর সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়। আমরা এখন আশাবাদী স্যারকে নিয়ে।
স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী রুমী আক্তার বলেন, কলেজে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমরা আন্দোলন করলে আমাদের কলেজের সেলিম স্যার, আফসান হোসেন ডেইজী, সুমগ্না ম্যাডাম, সুমি ম্যাডামসহ অনেক শিক্ষকই আমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করেছেন। স্যারতো অনিয়ম-দুর্নীতিকে সহ্য করবেন না, এজন্য এখন স্যারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
কলেজের ইসলামী ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শরিফ হোসেন বলেন, আজকে উনি আসাতে আমরা আনন্দিত, খুশি। অনেকেই না বুঝে বিরোধিতা করছেন। আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে। একজন সেনা অফিসার হিসেবে উনি কোচিং বাণিজ্য, বই বিক্রির মতো অনিয়ম মানবেন না, বিরোধীতার এটাও একটা কারণ। আমাদের দশ বছর পদোন্নতি নাই, তিন মাস ধরে বেতন নাই। আমাদের নিয়ে যত দাবি-দাওয়া, বৈষম্য আছে, ইনশাআল্লাহ স্যার এগুলো মিটাতে পারবে, এটা আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
তিনি আরো বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, রাজনীতি ও দুর্নীতিমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে উঠলে নিশ্চিত হবে উন্নতমানের শিক্ষা, এমনটাই আশা শিক্ষক ও ছাত্রীদের।