ইনজুরির কারণে প্রায় এক বছর মাঠের বাইরে নেইমার জুনিয়র। আবার কবে তার খেলা উপভোগ করতে পারবেন ভক্তরা, তা নিয়ে কৌতূহলের শেষ ছিল না। এবার জানা গেল ব্রাজিলিয়ান তারকার ফিটনেসের সবশেষ অবস্থা। মাঠে ফিরতে কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি, রয়েছেন পুনর্বাসনের শেষ পর্যায়ে।
তবে সৌদি আরবের ফুটবলের জটিল নিয়মে, ২০২৫ সালের আগে আল-হিলালের জার্সিতে মাঠে নামা হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।
আল হিলালের জিমে একাকী অনুশীলন। চোখে মুখে নতুন আশা। চরম অনিশ্চয়তার মধ্য থেকে উঠে দাঁড়ানোর আরও একবার চেষ্টা। এমন লড়াই তো নতুন নয় তার জন্য।
ইতিহাসের সবচেয়ে অভাগা ফুটবলারদের তালিকা করলে সেখানে নেইমারকে রাখতেই হবে। একটা সময় যাকে লিওনেল মেসি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কাতারে রাখা হতো, ক্যারিয়ারের শেষভাগে তারই সঙ্গী একরাশ হতাশা। আন্তর্জাতিক আর ক্লাব; সব মিলিয়েই প্রত্যাশার ধারেকাছে পৌঁছাতে পারেননি। ব্রাজিলের হয়ে ২০১৬ অলিম্পিকে স্বর্ণ আর ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে ২০১৪-১৫ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা ছাড়া উল্লেখযোগ্য অর্জন নেই তার। আর ব্রাজিলিয়ান তারকার এমন পরিণতির সবচেয়ে বড় কারণ ইনজুরি।
প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম চোটের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে ব্রাজিলের ইতিহাসের অন্যতম স্কিলফুল ফুটবলারকে। জাতীয় দলের ম্যানেজমেন্ট তাকে নিয়ে পরিকল্পনা সাজাতে পারেনি। কাড়িকাড়ি অর্থ দিয়ে তাকে দলে ভিড়িয়ে লাভ হয়নি কয়েকটি ক্লাবেরও। অবশ্য নেইমারকে নিয়ে আলোচনা থামেনি। অসম্ভব প্রতিভাবান ফুটবলার দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থেকেও নজর কেড়েছেন সবার।
সবশেষ ২০২৩ সালের অক্টোবরে উরুগুয়ের বিপক্ষে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে লিগামেন্টের গুরুতর ইনজুরিতে পড়েন নেইমার। ঐ এসিএল ইনজুরির কারণেই গেল প্রায় এক বছর মাঠের বাইরে ব্রাজিলিয়ান তারকা। সবশেষ ২ মেগা ইভেন্টেই তার কাছে থেকে সেভাবে সার্ভিস পায়নি সেলেসাওরা। ২০২২ বিশ্বকাপের সব ম্যাচে খেলতে পারেননি। এ বছর কোপা আমেরিকাতেও ছিলেন না।
মাঠে ফিরতে কঠোর অনুশীলন করে যাচ্ছেন নেইমার। ছবি: নেইমারের ফেসবুক পেজ থেকে বিরাট অঙ্কের অর্থ খরচ করে তাকে দলে ভেড়ানো আল-হিলালের হয়ে তিনি মাঠে নামতে পেরেছেন মোটে ৫ ম্যাচে। গত বছর আগস্টে ৯০ মিলিয়ন ইউরো ট্র্যান্সফার ফি’তে ২ বছরের চুক্তিতে সৌদি ক্লাবটিতে যোগ দেন। সেখানে তার বাৎসরিক বেতন ১৫০ মিলিয়ন ইউরো। যা পিএসজির তুলনায় অন্তত ৬ গুণ বেশি। কিন্তু সাইনিংয়ের পর এইি এক বছরের বেশি সময় বিশ্বের অন্যতম হাইয়েস্ট পেইড ফুটবলারকে বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের ক্লাবটির।
তবে এই আস্থার প্রতিদান দিতে মরিয়া নেইমার। তাই ম্যাচ ফিটনেস ফিরে পেতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শোনা যাচ্ছে, তাকে মাঠে দেখতে আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না ভক্তদের। মেডিকেল টিম থেকে জানানো হয়েছে, রিকভারির ফাইনাল স্টেইজে আছেন নেইমার। বছর শেষ হওয়ার আগেই ম্যাচ খেলতে রেডি হয়ে উঠবেন।
যদিও একটা জটিলতা থেকেই যাচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ বিদেশি ফুটবলারের নিবন্ধনের নিয়ম রয়েছে সৌদি ফুটবলে। সবশেষ ট্রান্সফার উইন্ডোতে সব স্লট পূরণ করে ফেলায় নেইমারের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ পাচ্ছে না আল হিলাল। তাই ২০২৫’এর উইন্ডোর জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই এই সুপারস্টারের।