ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা জাহারা মিতু। এই নায়িকাকে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে। সম্প্রতি ওবায়দুল কাদের ও চিত্রনায়িকা জাহারা মিতুকে নিয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশের এক সংবাদমাধ্যম। ‘নায়িকা জাহারা মিতুর স্পর্শ ছাড়া ঘুমাতেন না ওবায়দুল কাদের’ শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওটি অনেকের মতো নজরে পড়েছে এ চিত্রনায়িকারও।
এ নিয়ে নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।
বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে মঙ্গলবার এই নায়িকা যা লিখেছেন নিম্নে হুবহু তুলে ধরা হলো-
জাহারা মিতু লিখেছেন, সালটা ২০১৭, মিস বাংলাদেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরলাম, মিডিয়ায় কাজ করিনি তখনও। কোনো সিঙ্গেল কাজই না। একটি গ্রুপের ডিপার্টমেন্ট হেড হিসেবে কাজ করছি তখন। একদিন ঘুম থেকে উঠলাম আমার বেষ্টফ্রেন্ড Kareemur Rahman এর কলে, ‘এই মিতু তুমি আমি নাকি রিলেশনশিপে আছি, আমার আম্মা নিউজ দেখে আমাকে কল দিয়ে বলল। ’
চোখ ডলতে ডলতে বললাম, এ আবার নতুন কি? দুই ফ্রেন্ড মানেইতো মানুষ এটা ভাবে, কিন্তু আন্টিকে এই প্যাঁচ কে লাগাইল?
বলে, ‘লিঙ্ক দিচ্ছি, একটা নিউজ দেখ। তুমি আমি নাকি বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড। আমরা নাকি লুকায় লুকায় রেষ্টুরেন্টে দেখা করি। ’
এখন যাও দু-চারজন চেনে, তখন কাক-পক্ষীও চিনত না। তবে ওই থেকে শুরু। হলুদ সাংবাদিকতা তখন থেকেই আমার সঙ্গী!
সাংবাদিকদের জন্যই নায়িকা হয়েছিলাম, এত পজেটিভ নিউজ ছিল তাদের, নায়িকা হবার পর আবার এদেরই সিন্ডিকেট দেখলাম। অভিযোগ নেই, যে একবারও উপকার করেছে, সে আমার ভাই-ই নাতো কোথাও অভিযোগ আছে কাজ করতে গিয়ে কারো টাকা মেরেছি, না অভিযোগ আছে কারো শিডিউল ফাঁসিয়েছি, না কোনোদিন কারো সাথে দুর্ব্যবহার করেছি। আমার কাজের ক্ষেত্রে আমাকে নিয়ে কারও কোনো সমস্যা নেই, সমস্যা ওই এক জায়গায়, আমার বয়ফ্রেন্ড টা কে? কারণ আমার আসলে প্রেম যে কার সাথে এটাতেই তাদের সব আগ্রহ।
ভাইরে আমার কোনো পুরুষকে ভালো লাগে না, আমি কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না। অনেক ইন্টারভিউতে বলেছি আমার থেকে একদিনের বড় কোনো ছেলেকেও আমার ভালো লাগে না। গত সাড়ে তিন বছর আগে এমন এক ধোঁকাবাজের সাথে সম্পর্ক ভেঙেছি যে, এরপর সম্পর্ক জিনিষটাই আমার প্যারা মনে হয়। কিন্তু আপনাদের অত্যাচারে মনে হচ্ছে একটা প্রেম করে প্রেমিক সামনে আনতেই হবে, তাহলে যদি আপনাদের একটু মনের আনচান ভাব কমে আরকি। তখন আর আবোল তাবোল প্রেম কাহিনী বানানো লাগবে না।
আর একটি কথা, ডিজিটাল যুগে সবকিছুর রেকর্ড থাকে। আমার বাসা থেকে বের হওয়ার সিসিটিভি ফুটেজ যেমন থাকবে, আমি কোথাও গেলে সেটারও রেকর্ড থাকবে। কললিস্টেরও রেকর্ড থাকে। এসব বুঝে শুনে নিউজ করতে হয়।
দেশের সর্বোচ্চ একজন মন্ত্রীকে, মন্ত্রিপাড়ায় প্রতিদিন ঘুম পাড়ানোর নিউজ কোনো মেয়াদোত্তীর্ণ সবজি সেবনের ফলেই লেখা যায়। এর থেকে হাস্যকর নিউজ আমি আমার বাপের জন্মে দেখিনি। সত্যিই দেখিনি। এতো হেসেছি আমি নিজে, মানুষ আর কতোটুকু হাসবে।
কোনো সোর্স নেই, আমার বক্তব্য নেই, কোনো প্রমাণ নেই আর আমার নাম ডিরেক্ট লিখে দিলেন?
একজন রাজনৈতিক ব্যক্তির নামে ভিউ বলে, ভিউবাণিজ্যে এতটা নিচে নামলেন? একটাবার ভাবলেন না, মেয়েটা আসলেই কোনোদিন ওই ভাইয়ের সাথে একা দেখা করেছে কিনা? খবর নিয়ে দেখেন ভাইয়েরা। এটুক একটু বের করেন প্লিজ।
নিজেদের সাংবাদিক দাবি করেন? সত্যিই দাবি করেন? আজ থেকে আর কইরেন না। আমি চুপচাপ আমার মতন থাকি, থাকতে দেন। কবি তো নিরবই ছিল, মুখটা খুলাইলেন ক্যান।