Homeজেলাবগুড়ার শেরপুরে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৩ জন

বগুড়ার শেরপুরে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৩ জন

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি।।

বগুড়ার শেরপুরে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে তিনজনকে গণধোলাই দিয়েছে ক্ষুব্ধ ছাত্র- জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থালে পুলিশ গিয়ে তাদেরকে আটক করে। সোমবার দুপুরে উপজেলার শুবলী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পরে রাতে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

মামলায় এজাহার ভুক্ত আসামীরা হলেন, বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব বগুড়া জেলার সভাপতি আব্দুল হালিম, স্বাধীন বাংলা নিউজ অনলাইন পত্রিকার বগুড়া জেলা প্রতিনিধি পরিচয়ে মুক্তার শেখ, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার শেরপুর প্রতিনিধি পরিচয় দেওয়া রায়হান কমল ও উপজেলার ঘোলা গাড়ি ঘুটু বটতলা এলাকার মো. মাসুদ। এছাড়াও মামলার এজাহারে তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। উপজেলার খানপুর ইউনিয়নে শুবলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারজানা ইসলাম মামলাটি দায়ের করেন।

শেরপুর থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এই চক্র অনেকদিন থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। গত রবিবার দুপুরে আসামীরা উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হুসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে এক হাজার টাকা নিয়েছে। একই দিন বেলা ২টার দিকে শুবলী কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এ সময় সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে দেড় হাজার টাকা নিয়েছে। একই ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে নেয় ৫ হাজার টাকা। বাঁকি টাকা পরের দিন নেওয়ার কথা বলে তারা চলে আসেন। পরদিন সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে একই গ্রুপ শুবলী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষক ফারজানা ইসলামের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানে অভিভাবকের মধ্যে জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এলাকার মানুষজন। এ সময় আবদুল হালিম, মুক্তার শেখ ও রায়হান পারভেজকে ক্ষুব্ধ মানুষজন আটক করে গণধোলাই দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে সঙ্ঘবদ্ধ গ্রুপের মো. মাসুদসহ অজ্ঞাতনামা আরো তিনজন ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন আটক তিনজনকে ঘেরাও করে রাখে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে গতকাল (সোমবার) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় ওই তিনজনকে পুলিশে সোপর্দ করে।

এ বিষয়ে শুবলী কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা প্রদানকারী মাসুদ রানা বলেন, “রবিার দুপুরে আমি অফিস কক্ষে তালা দিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে যাই এই সুযোগে ওই ব্যক্তিরা ভিডিও ধারন করেন। আমি ফিরে আসলে তারা আমাকে ব্লাকমেইল করে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমার কাছে থাকা দেড় হাজার টাকা দিয়েছি। তারা একই ভাবে আমার অফিসের স্বাস্থ্য সহকারি জাহানারা বেগমের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়েছে। সোমবার তারা বাকি টাকা নিতে আসলে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা তাদের উপর হামলা করে।“

মামলার বাদি শুবলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারজানা ইসলাম বলেন, “রবিবার আমি ছুটিতে ছিলাম। আমাকে না পেয়ে তারা সোমবার স্কুলে এসে গাছকাটা, জাল সনদ ইত্যাদি আপত্তিকর প্রশ্ন তুলে আমাকে ও অন্য শিক্ষদের হুমকী দিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। এসময় স্কুলের শিক্ষার্থীরা এসে তাদের ঘেরাও করে ফেলে। খবর পেয়ে পাশেই শুবলী কমিউনিটি ক্লিনিক ও সুবলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লোকজনও ছুটে আসেন। নিমিষেই সেখানে সহস্রাধিক লোক জড়ো হয়ে তাদের মারধর শুরু করে। আমরা তাদের রক্ষা করে থানায় খবর দেই।“

এ নিয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, “গ্রেফতার তিনজনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের সনাক্তকরণ ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।“

সর্বশেষ খবর