Homeবাংলাদেশসাভারের সেই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের মামলা নিলো পুলিশ

সাভারের সেই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের মামলা নিলো পুলিশ

কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রবল রূপ নেয় রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হলে। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। আর সেই ক্ষোভ আরও বাড়ে এর দুদিন পর সাভারে আসহাবুল ইয়ামিন নিহতের ঘটনায়।

গত ১৮ জুলাই ইন্টারনেট বন্ধের আগে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা, আন্দোলন চলাকালে পুলিশের সাঁজোয়া যানের (এপিসি) ওপর পড়ে আছে গুলিবিদ্ধ ইয়ামিন।

পরে তার নিথর দেহ টেনে নিচে ফেলা হয়। এরপর এপিসির চাকার নিচে পড়বে বলে দেহটি টেনে দূরে সরানো হয়। তখনও নড়ছিল ইয়ামিনের দেহ। লোমহর্ষক সেই ভিডিও দেখে আঁতকে ওঠেনি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
রাজধানীর মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) শিক্ষার্থী ইয়ামিনের বর্বরোচিত সেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অবশেষে হয়েছে মামলা। গতকাল সাভার পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করেছে।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর তাকে এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সেই সময়ে সাভারে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের আসামি করে গত ২৫ আগস্ট ঢাকার আদালতে হত্যা মামলা করেন ইয়ামিনের মামা আবদুল্লাহ আল মুনকাদির রোকন। পরে আদালত এজাহার গ্রহণে নির্দেশ দেন সাভার থানাকে। এর ৮ দিন পর গতকাল মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে নিহত ইয়ামিনের মামা আব্দুল্লাহ আল কাবির বাদী হয়ে এই মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান।

ইয়ামিনের পরিবার জানায়, স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা বাসায় এসে আসামির তালিকা থেকে তাদের বাদ দিতে অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে ইয়ামিনের বাবা মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘গত সপ্তাহে আমার বাসায় পুলিশ এসেছিল কয়েকজন। তারা বলেন, তারা সহযোগিতা করতে চায়। কীভাবে এজাহার করতে হবে বলল। ওরা একটা এজাহারের খসড়া দিতে চেয়েছিল। তাতে দেখা গেল, সব (আসামি) রাজনৈতিক নেতার নাম। পুলিশের কারও নাম নাই। ’

মামলার বাদী রোকন বলেন, ‘পুলিশ যে খসড়া দিয়েছিল, তা আমাদের পছন্দ হয়নি। কারণ, তারা খসড়া এজাহার থেকে তাদের অফিসারের নাম বাদ দিয়েছিল। ’

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে বেলা ১১টার দিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশের মুহুর্মুহু টিয়ার শেল ও রাবার বুলেটে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে হেলমেট পরে অস্ত্রসহ অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের কয়েকশ নেতাকর্মী। কয়েকজনের হাতে ছিল পিস্তল ও শটগান। তাদের আক্রমণের মাঝেই একটা সময় গুলি খান ইয়ামিন। তার বুকের বাঁ পাশ ও গলায় অসংখ্য ছররা গুলির চিহ্ন ছিল।

Exit mobile version