আদমশুমারি করতে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করতে চলেছে ইরাক। গত ২৭ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে আদমশুমারি করা হবে। আর এ লক্ষ্যে দেশটিতে জারি করা হবে দুই দিনের কারফিউ। আগামী নভেম্বরে দেশটিতে আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরাক গত ২৭ বছরের মধ্যে দেশের প্রথম আদমশুমারির জন্য আগামী নভেম্বরে দুই দিনের কারফিউ জারি করবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানী রোববার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘জনসংখ্যা শুমারি করার জন্য ২০ এবং ২১ নভেম্বর ইরাকের সমস্ত প্রদেশে কারফিউ জারি করা হবে। ’
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদমশুমারির আগে পরিসংখ্যানগত কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের (কেআরজি) সঙ্গে সমন্বয় চূড়ান্ত করাসহ প্রক্রিয়াটির জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা অনুমোদন করা হয়েছে।
এছাড়াও কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য শ্রেণীকক্ষ এবং যুব কেন্দ্র প্রদানের জন্য একাধিক মন্ত্রণালয় থেকে সহায়তা পাওয়া যাবে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
কয়েক দশকের সংঘাত ও সহিংসতায় বিধ্বস্ত ইরাক এর আগে বেশ কয়েকবার আদমশুমারির কার্যক্রম স্থগিত করেছে। বিশেষ করে ২০১০ সালে বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনার কারণে আদমশুমারি স্থগিত করেছিল দেশটি।
এর আগে ১৯৯৭ সালে ইরাকের ১৫টি প্রদেশে সর্বশেষ সাধারণ আদমশুমারি করা হয়েছিল। সেসময় দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় তিনটি প্রদেশ এই আদমশুমারির বাইরে ছিল। মূলত উত্তরাঞ্চলীয় ওই তিনটি প্রদেশ নিয়ে আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চল গঠিত।
এদিকে বিক্ষিপ্ত সহিংসতা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্থিতিশীলতার কিছুটা আভাস ফিরে পেয়েছে ইরাক। আর এ কারণে ২৭ বছর বছর পর এবারই প্রথম আদমশুমারির উদ্যোগ নিলো দেশটি। বর্তমানে দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৩০ লাখ বলে মনে করা হয়।
ইরাকি কর্তৃপক্ষ আসন্ন আদমশুমারির জন্য জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেছে। মূলত অতীতে ইরাক প্রতি ১০ বছর পর পর আদমশুমারি করা হয়। কিন্তু ১৯৯৭ সালের পর পরবর্তী আদমশুমারি ২০০৭ সালে করা যায়নি। কারণ মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি সেসময় সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিমজ্জিত ছিল।