ইয়েমেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ আল হুদায়দায় প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের জেরে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ২৫ জন।
ইয়েমেনের পশ্চিমাঞ্চলে ক্ষমতাসীন হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যম সাবা নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে আনাদোলুর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাদেশিক রাজধানী আল হুদায়দা সিটির প্রবেশমুখও বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়া প্রদেশের বিভিন্ন গ্রাম-শহরে হাজার হাজার বাড়িঘর ডুবে গেছে, অবকাঠামো এবং কৃষির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং বহু এলাকার পথ-ঘাট ও সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ধ্বংস হয়ে গেছে।
অতি বর্ষণের কারণে গত জুলাই মাস থেকে ইয়েমেনের বিভিন্ন অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা শুরু হয়েছে। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, আকস্মিক বন্যার কারণে গত জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশটিতে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
ইয়েমেনে এক দশক ধরে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ চলছে। এই গৃহযুদ্ধের একটি পক্ষ হুতি, যারা আনসারুল্লাহ নামেও পরিচিত। ১৯৯০-এর দশকে গোষ্ঠীটির উত্থান। তাদের নেতা হুসেইন আল-হুতি শিয়া ইসলামের জাইদি ধারার অনুসরণে ধর্মীয় পুনর্জাগরণমূলক আন্দোলন শুরু করেন।
জাইদিরা কয়েক শতাব্দী ধরে ইয়েমেন শাসন করলেও ১৯৬২ সালে গৃহযুদ্ধের পর সুন্নিরা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। এরপর তারা ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ে। সুন্নি মৌলবাদ মোকাবিলা বিশেষ করে সৌদি আরবের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া ওয়াহাবি মতবাদ মোকাবিলায় আল-হুতি আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলনই ক্রমে সশস্ত্র রূপ নেয়।
গত প্রায় ১০ বছরের গৃহযুদ্ধে ইয়েমেনের অবকাঠামো এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে দেশটিতে দেখা দিয়েছে গুরুতর মানবিক বিপর্যয়।