ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি পালালেও, দেশেই রয়ে গেছে সাবেক অনেক মন্ত্রী-এমপিসহ জোটের নেতারা। তাদের নামে হচ্ছে একের পর এক হত্যা মামলা, গ্রেপ্তারও হয়েছেন এখন পর্যন্ত অনেকেই। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার হন সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত পোশাক শ্রমিক রুবেল হত্যামামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে নেওয়া হয় সাতদিনের রিমান্ডে। সেখানেই জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছেন তিনি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে ছাত্র আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কূটকৌশল সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন তিনি। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কেও মুখ খুলেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি।
জিজ্ঞাসবাদে ইনু বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের প্রথম পাঁচ বছর আমি মন্ত্রী ছিলাম। পরের ১০-১১ বছরে আমরা সরকারে ছিলাম না। তবে ১৪ দলে জোটের শরিক ছিলাম। জোটের শরিক হিসেবে আমরা শেখ হাসিনাকে অনেক পরামর্শ দিয়েছি। ছাত্রদের দাবি মেনে নিতে বলেছি। যেসব পুলিশ সদস্য ছাত্রদের ওপর গুলি চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। টাকা পাচারকারীদের ধরতে বলেছিলাম। উনি চীন সফরে যাওয়ার আগেও বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছিলাম। আমাদের কোনো পরামর্শই তিনি কানে নেননি। ’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘সে কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। অথচ কোটার বিরোধিতা করে। তাহলে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব বাতিল করে রাস্তায় নামুক। এভাবে তার কথা বলা ঠিক হয়নি। ’
ডিবিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদেরকে নিয়েও মুখ খুলেছেন ইনু। দিয়েছেন কূটকৌশল সম্পর্কে তথ্য। এছাড়া বলেছেন, ছাত্র আন্দোলন দমনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘তাদের দমাতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। ’ এই মন্তব্যটি ছাত্র-জনতার ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল।