সম্প্রতি দেশের স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে। এ মুহূর্তে সর্বাত্মকভাবে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই। তা ছাড়া আল্লাহর সাহায্য লাভের এটাই সুবর্ণ সুযোগ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা সত্কর্ম ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে একে অন্যকে সহযোগিতা করো’।
(সুরা মায়িদা, আয়াত : ২)
তাই তো নবীজির প্রিয় সাহাবিরা বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে খুবই মনোযোগী ছিলেন। একবারের ঘটনা। হঠাৎ একদিন কিছু নগ্নপদ, খালি মাথা, চামড়ার বস্ত্র পরিহিত গলায় তরবারি ঝোলানো একদল মানুষ রাসুলুল্লাহ (সা.) নিকট এলো। তাদের চেহারায় ছিল অনাহারের ছাপ।
এ অবস্থা দেখে নবীজির চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। নবীজি হজরত বেলাল (রা.)-কে নির্দেশ দিলেন আজান ও ইকামত দিতে। সালাত আদায়ের পর রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবা দিলেন। খুতবায় সুরা নিসার প্রথম আয়াত ও সুরা হাশরের আঠারো নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করলেন, অর্থ : ‘হে মুমিনগণ, আল্লাহকে ভয় করো।
প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক, আগামীকালের জন্য সে কী অগ্রিম পাঠিয়েছে?’ (এরপর নবীজি বললেন,) ‘প্রত্যেকেই দিনার, দিরহাম, বস্ত্র, গম, খেজুর দান করুক। এমনকি প্রয়োজনে এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও। ’ তখন এক আনসারি সাহাবি বড় একটি থলে নিয়ে এলেন। ভারী হওয়ার কারণে যেন তা বহন করতে পারছিলেন না। এরপর লোকজন একের পর এক সদকা নিয়ে আসতে লাগল।
হাদিসের বর্ণনাকারী বলেন, অবশেষে আমি খাদ্য ও বস্ত্রের দুটো স্তূপ দেখতে পেলাম। এ দেখে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চেহারা মোবারক ঝলমল করে উঠল। যেন এক টুকরা সোনা। তারপর রাসুল (সা.) ইরশাদ করলেন, ইসলামে (মুসলমানদের মাঝে) যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজের সূচনা করবে, তার সওয়াব সে পাবে। সঙ্গে সঙ্গে তাদের সওয়াবও পাবে, যারা এরপর সে অনুযায়ী আমল করবে। তবে সে ক্ষেত্রে আমলকারীর সওয়াব থেকে কিছুই কমানো হবে না। এমনিভাবে যে ব্যক্তি ইসলামে (মুসলমানদের মাঝে) কোনো মন্দ কাজের সূচনা করবে তার গুনাহও তার ওপর বর্তাবে। সঙ্গে সঙ্গে যারা এরপর সে অনুযায়ী চলবে তাদের গুনাহও। এতে আমলকারীর গুনাহ মোটেও কমবে না। (মুসলিম : ১০১৭)
তাই মুসলমানদের উচিত, এখনই যার যার অবস্থান আমাদের দেশের বন্যাত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সর্বোচ্চা চেষ্টা করা।