ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি হামলার মধ্যেই মহামারি আকারে পোলিও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য অবকাঠামো ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর হামলা এবং টিকা সহায়তা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এ বিপর্যয়।
দশ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা গাজাযুদ্ধে ভেঙে পড়েছে উপত্যকাটির স্বাস্থ্যব্যবস্থা। ইসরাইলি হামলায় স্বাস্থ্য অবকাঠামো ও পানি সরবরাহব্যবস্থার ওপর হামলা এবং ত্রাণ সহায়তা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় নানা রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিশুদের টিকাদান কর্মসূচিও।
গেলো বছরের ১৬ আগস্ট গাজায় উপত্যকাটিতে প্রথম পোলিও রোগী শনাক্ত হয়। দশ মাসের এক শিশুর পোলিও ধরা পড়ে, যার টিকা দেয়া হয়নি। একই দিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, তিনটি শিশুর মধ্যে প্যারালাইসিসের লক্ষণ দেখা গেছে, যা গাজায় শিশুদের মধ্যে পোলিও ছড়ানোর উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয়। গত ২৩ আগস্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিশ্চিত করে ওই দশ মাসের শিশুটি এখন প্যারালাইজড।
ইউনিসেফ ২২ আগস্ট থেকে গাজায় পোলিও টিকার ডোজ বিতরণ শুরু করেছে। এর লক্ষ্য ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুর টিকা দেয়া। এ প্রকল্পে ডব্লিউএইচও ও জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থাসহ (ইউএনআরডব্লিউএ) বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা যুক্ত রয়েছে। কিন্তু চলমান সংঘাত ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এ মানবিক প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে পোলিও মহামারি আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ সাত দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। যাতে টিকাদান কার্যক্রমের গতি বাড়ানো যায়। লাখ লাখ বাস্তচ্যুত ফিলিস্তিনির কাছে পোলিও ভ্যাকসিন পৌঁছে দেয়ার জন্য ইউনিসেফ কাজ করছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই এখন ক্যাম্পে বসবাস করছেন, যাদের কাছে নেই পর্যাপ্ত পানি কিংবা সঠিক পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা।
পোলিও রোগী শনাক্ত হওয়ার আগে গাজা ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে পোলিওমুক্ত ছিল। সফল টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে এটা সম্ভব হয়েছিল।