প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শেরপুর প্রেসক্লাবের নবগঠিত কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করায় জেলা বিএনপির সকল সংবাদ বয়কট করেছেন সাংবাদিকরা। মঙ্গলবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নবগঠিত কমিটি এই বয়কটের কথা জানিয়েছে।
এর আগে সোমবার রাতে জেলা বিএনপির প্যাডে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. মাহমুদুল হক রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নবগঠিত কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এর পর থেকেই বিভিন্ন মহলে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। সাংবাদিকদের গণ্ডি পেরিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝেও শুরু হয় তীব্র আলোচনা আর সমালোচনার। সবার একই প্রশ্ন, ‘রাজনৈতিক দল কিভাবে একটি পেশাজীবী সংগঠনের কমিটিকে বিলুপ্ত করে।
এই সমালোচনা যখন তুঙে তখন তড়িঘড়ি করে ওই রাতেই প্রেস বিজ্ঞপ্তির সংশোধনী প্রকাশ করেন তারা। সংশোধিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রেস ক্লাবের কমিটি গঠনের বিষয়ে তাদের অবগতি না থাকায় পরবর্তীতে সকল সাংবাদিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কমিটি গঠন করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন জেলা বিএনপির এই দুই নেতা।
এর আগে শেরপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি, কার্যকরী সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে বিতর্কিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয় জেলা বিএনপির প্রতি।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, যেহেতু শেরপুর প্রেসক্লাব একটি অরাজনৈতিক পেশাজীবী সংগঠন। তাই এই সংগঠনের কমিটি গঠন করা বা বিলুপ্ত করার অধিকার শুধুমাত্র সাংবাদিকদেরই রয়েছে। কোনও রাজনৈতিক দল এই সংগঠনের কমিটিতে হস্তক্ষেপ করার অধিকার রাখে না।
পরে নতুন কমিটির সকল সদস্যের উপস্থিতিতে বিএনপির এহেন তথাকথিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেল এবং সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর সকল রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের সংবাদ বয়কট করার ঘোষণা দেন তারা।
সংশোধিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর সঙ্গে কথা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে টেলিফোনে জানান, এর আগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কিছু প্রিন্ট মিস্টেক ছিল। তবে আমরা আসলে নতুন কমিটি গঠন করার কথা বলিনি। আমরা চেয়েছি সবাই মিলে একটি সুন্দর কমিটি যেন হয়। যদি নতুন কমিটি গঠনের কথা লেখা হয়ে থাকে তাহলে সেটা প্রিন্টিং মিস্টেক। প্রয়োজনে আমরা আবারও সংশোধনী দিব।
এর আগে প্রেসক্লাবের কমিটি বিলুপ্তের বিষয় জেনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় মিডিয়া উইং এর কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান।
তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমি প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পেয়েছি, এটা দুঃখজনক। এটা তো করতে পারে না। আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাব বা কোন জেলা প্রেসক্লাব বিএনপির অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন নয়, এমনকি বিএনপির পেশাজীবী সংগঠনও নয়। এই সংগঠনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার কোন সুযোগই নেই।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২১ আগস্ট শেরপুর প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এনটিভি’র কাকন রেজাকে সভাপতি, দেশ টিভি’র রফিক মজিদকে কার্যকরী সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের মাসুদ হাসান বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে ২২ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়। জেলার মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে এ কমিটি গঠন করায় সেটি সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।