অস্ট্রেলিয়ায় চালু হয়েছে ‘রাইট টু ডিসকানেক্ট’ আইন। কর্মঘণ্টার বাইরে এখন চাইলেই যেকোনো কর্মী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে পারবেন অফিসের সঙ্গে। এই আইন অনুযায়ী কর্মঘণ্টার পরে যোগাযোগ না রাখার জন্য শাস্তির আওতায় আনা যাবে না কর্মীদের। নতুন এই আইনে খুশি দেশটির কর্মজীবী সাধারণ মানুষ।অস্ট্রেলিয়া সরকারের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, সোমবার থেকেই এই আইন কার্যকর হয়েছে।
কর্মঘণ্টার বাইরেও অফিসের সঙ্গে নানা প্রয়োজনে যোগাযোগ রাখার বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতার পর্যায়ে চলে যায়। ফোন কিংবা কম্পিউটারের মাধ্যমে সেবা প্রদান করে যেতে হয় অফিসের নির্ধারিত সময়ের পরেও। সাড়া দিতে হয় ই–মেইল ও ফোন কলের।
অনেকসময় বাধা বিঘ্নতার মুখে পরে পারিবারিক জীবনে। এতে ব্যক্তিজীবনে স্বস্তি মেলেনা অনেকেরই। এ ছাড়াও অফিসের ডাকে পর্যাপ্ত সাড়া না দিতে পারলে শুনতে হয় মালিকপক্ষের অভিযোগ।
বিবিসি বলছে, কর্মীদের এসব সমস্যার নিরসনে অস্ট্রেলিয়া এবার নতুন এক আইন প্রণয়ন করেছে। যে আইনে কর্মীদের থাকবে কর্মঘণ্টার বাইরে অফিসের কাজে সাড়া না দেয়ার অধিকার। ‘রাইট টু ডিসকানেক্ট’ নামের এই আইনটি এসকল সুবিধা প্রদান করবে দেশটির কর্মীদের।
নতুন আইন অনুসারে যেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মী ১৫ জনের বেশি, সেখানকার কর্মীরা কর্মঘণ্টার বাইরে চাইলে তাদের বস বা সহকর্মীর ফোন কল, ই–মেইল ও বার্তার জবাব না দিলেও পারবেন। এ ছাড়া কোনো সেবাগ্রহীতাও কোনো কর্মীর সঙ্গে কর্মঘণ্টার বাইরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি উপেক্ষা করতে পারবেন।
অবশ্য নতুন আইনটি ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানের জন্য আগামী বছরের আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। ১৫ জনের বেশি কর্মী থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোয় সোমবার থেকেই কার্যকর হয়ে গেছে।
অস্ট্রেলিয়া ইন্সটিটিউটের করা সার্ভে অনুযায়ী ২০২৩ সালে গড়ে ২৮১ ঘণ্টা বিনা বেতনে কাজ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার কর্মীরা যা অর্থের হিসেবে ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। সোমবার কার্যকরী হওয়া নতুন এই আইন কর্মীদেরকে ব্যক্তিগত জীবনে অফিসের অনুপ্রবেশ বাধা দেয়ার আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে সাহায্য করবে।
তবে কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষ আইনটির সমালোচনা করে বলেছেন আইনটি প্রয়োগে অস্পষ্টতা কর্মী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগাযোগে সমস্যা তৈরি করবে। কাজ হয়ে পড়বে আরও বেশি কঠিন। যার প্রভাব পড়বে অর্থনীতির ওপর।