পানি ছাড়ার আগে ভাটির দেশকে জানাতে হয়, কিন্তু ভারত সেটা করেনি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘উজানের দেশে যদি অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয় এবং পানি ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে ভাটির দেশকে আগে থেকেই জানানোর প্রয়োজন হয়, যাতে ভাটির দেশের লোকজন নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে এবং লোকজনকে সরানো যায়। কিন্তু এবার এই জানানোর বিষয়টি ভারত প্রতিপালন করেনি। ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তিতেও এমনটি বলা হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার মশাজান খোয়াই নদীসংলগ্ন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, ‘দেশকে বন্যামুক্ত রাখতে নদীকে নদীর মতো রাখা উচিত। বাঁধ সুরক্ষিত রাখা উচিত।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এবারের বিষয় থেকে শিক্ষা নিয়ে যত অভিন্ন নদী আছে সেগুলোর সব কটার ব্যাপারেই পানি ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্ন দেখা দিলে যাতে আগাম সতর্কতা বাংলাদেশকে জানানো হয় সেই বার্তা ভারতে দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ভারতীয় দূতাবাসকে বিষয়টি জানিয়েছেন। প্রাকৃতিক সমস্যা আসবেই, কিন্তু এটি না জানানোর কারণে যাতে মানুষের সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ’
এর আগে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক প্রশান্ত সোম মহান, পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন, সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল নাজির ও মেজর ইশরাত।
এ সময় খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তেফাজ্জল সোহেল ও বাপার সভাপতি ইকরামুল ওয়াদুদ হবিগঞ্জের পরিবেশগত সমস্যাগুলো নিয়ে একটি পত্র প্রদান করেন।
সেখানে জরুরি ভিত্তিতে খোয়াই নদী খনন, নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালি উত্তোলন বন্ধ, পুরান খোয়াই নদী দখলমুক্তকরণ, পুকুর ও জলাশয় দখলমুক্তকরণ এবং জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কাটা বন্ধ করার দাবি করা হয়। উপদেষ্টা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তাঁর পৈত্রিক গ্রাম চুনারুঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের নরপতি হাবিলিতে উপস্থিত হয়ে বাবা সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ মহিবুল হাসানের কবর জিয়ারত করেন। পরে মুড়ারবন্দ সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের মাজার জিয়ারত করেন তিনি। বিকেলে তিনি চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে পরিবেশ অধিদপ্তর, বন অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়সভা করেন।