অতিরিক্ত জোয়ারের চাপে খুলনার উপকূলীয় এলাকা পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর স্থানীয় ভদ্রা নদীতে পানির চাপ বাড়লে ভাঙতে থাকে বাঁধটি। অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে পুরো এলাকা তলিয়ে যায়। এতে ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়। স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে এখন চলছে বাঁধ নির্মাণের কাজ।
স্থানীয় রাজু হালদার বলেন, আমাদের এলাকা ছাপিয়ে অন্তত ১৩টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয়ভাবে আমরা চেষ্টা করেও এটা ঠিক করতে পারিনি। পানির চাপ আরও বাড়ছে। এই এলাকায় আরও বেশ কিছু বেড়িবাঁধ ভেঙে যেতে পারে। রাতে পানির চাপ বাড়লে অনেক বাড়ি ঘর ভেঙে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। কিছুদিন আগে হওয়া ঝড়ে এখানকার বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড নামমাত্র সংস্কার করেছে। ফলে এখন আবার ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রুত পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যবস্থা না নিলে আমাদের এলাকার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
স্থানীয় আরেকজন বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে আমরা বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করছি, শনিবার সকাল পর্যন্ত বাঁধের অনেকটা অংশ নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তবে পুরো এলাকা এখনও পানির নিচে। অনেক স্থানে ধানের বীজতলা ডুবে যাওয়ায় এখানে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেক মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল বলেন, স্থানীয়দের সহায়তায় ভেঙে যাওয়া বাঁধ পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। শনিবার বিকেলের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন হয়ে যাবে। আরও কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ আছে। ভাঙন মোকাবেলায় আমারা প্রস্তুত আছি।স্থানীয়রা জানান, কালিনগর গ্রামের পাশেই ভদ্র নদী। দুপুরের দিকে সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপকূল রক্ষার বেড়িবাঁধের প্রায় ২০০ হাতের মতো ভেঙে যায়। এ সময় ১৩টি গ্রামের মধ্যে পানি প্রবেশ শুরু করে। প্লাবিত গ্রামগুলো হল- কালি নগর, গোপী পাগলা, তেলিখালী, সৈয়দখালী, খেজুরতলা, সেনের বেড়, হাটবাড়ি, ফুলবাড়ি, বাগীরদানা, দুর্গাপুর, দারুল মল্লিক, হাবিখোলা ও নোয়াই।
দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার পলাশ রায় বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কালিনগর গ্রামে ভদ্র নদী ভাঙন শুরু হয়। ভাটার সময় আমি স্থানীয় লোকজন নিয়ে বাঁধগুলো সংস্কারের চেষ্টা করছিলাম।