Homeআন্তর্জাতিকমিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে স্থানীয় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর ২০১৭ সালের মতো আবারও গণহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রধান ভলকার তুর্ক এই আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক মিয়ানমারজুড়ে, বিশেষ করে রাখাইনে তীব্রভাবে অবনতিশীল পরিস্থিতি সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধ থেকে পালাতে গিয়ে শত শত বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।

গত বছরের নভেম্বরে রাখাইনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর ওপর ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে। এর পর থেকে রাখাইন ব্যাপক সংঘর্ষে কাঁপছে। এই অবস্থায় অঞ্চলটিতে বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণ ও শহরগুলোতে নির্বিচারে বোমা হামলাসহ রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চলছে বলেও উল্লেখ করেন তুর্ক। আর এর জন্য তিনি উভয় পক্ষকেই দায়ী করেন।

আরাকান আর্মির দাবি, তারা রাখাইন রাজ্যের জাতিগত রাখাইন জনগোষ্ঠীর জন্য আরও স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়াই করছে। তবে রাজ্যটিতে এখনো ৬ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম রয়ে গেছে। এর আগে, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের জান্তাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক গণহত্যা চালায়। এই বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে একটি মামলা চলছে।

ভলকার তুর্ক বলেছেন, ‘হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে পায়ে হেঁটে পালাতে বাধ্য করা হয়েছে। আরাকান আর্মি তাদের বারবার এমন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে যেগুলো আশ্রয়ের জন্য খুবই কম নিরাপদ।’ এ সময় তিনি বাংলাদেশ সীমান্তের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ থাকায়, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সদস্যরা নিজেদের সেনাবাহিনী ও এর মিত্র বাহিনী এবং আরাকান আর্মির মধ্যে আটকা পড়েছে। তাদের জন্য নিরাপদ কোনো পথ নেই।’

বাংলাদেশে এখনো ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছে। এই বিষয়টি উল্লেখ করে ভলকার তুর্ক বলেন, ‘এই মাসে সামরিক অভিযানের সাত বছর পূর্ণ হচ্ছে। যেই অভিযানের ফলে (মিয়ানমার) সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ৭ লাখ (রোহিঙ্গা)। বিশ্ব “আর কখনোই যেন এমন না ঘটে’ বলার পরও আমরা আরও একবার রাখাইনে হত্যা, ধ্বংস ও বাস্তুচ্যুতি প্রত্যক্ষ করছি।’

এদিকে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের এক বিবৃতিতে সব পক্ষকে ‘সহিংসতা বন্ধ করতে এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার’ আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি ‘আঞ্চলিক সুরক্ষা প্রচেষ্টা, সংঘাত আক্রান্ত সম্প্রদায়গুলোতে আরও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা এবং যেসব দেশ তাদের (রোহিঙ্গাদের) আশ্রয় দিয়েছে—বিশেষ করে বাংলাদেশ—তাদের আরও বেশি সহায়তা দেওয়া’ জোরদার করার আহ্বান জানান।

Exit mobile version