পানির চাপ অনেক বেশি হয়ে গেলে ভারত তাঁদের বাঁধের গেট খুলে পানি সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যেহেতু এক তরফা ভাবে আন্তর্জাতিক নদীর উপর বাঁধগুলো তাঁরা বানিয়েই রেখেছে। কিন্তু এই ব্যাপারে অবশ্যই বাংলাদেশ সরকারকে আগাম হুশিয়ারি দেয়ার মতো কূটনৈতিক ভদ্রতা দেখানো উচিত। এতে করে যেসব এলাকা দুর্গত হতে পারে, সে এলাকায় আগাম ব্যবস্থা নেয়া যায়। দেশের জানমালের ক্ষতি কম হয়, ত্রান ও উদ্ধার পরিকল্পনার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সহজ হয়।
কিন্তু ভারত কখনো তা করে না। তাঁরা কোন হুশিয়ারি না দিয়ে বাঁধ খুলে দেয়, আমাদের নিম্নাঞ্চলে ফ্লাশ ফ্লাড হয়। স্রোতের প্রবল তোড় থাকে, কয়েক ঘন্টার মধ্যে গ্রামকে গ্রাম তলিয়ে যায়। সম্পদ বাঁচানো তো দূরের কথা, উদ্ধার কাজ চালানোই অনেক কঠিন হয়ে যায়। সাধারন বন্যায় ধীরে ধীরে পানি উঠে, স্রোতের চাপ কম থাকে; মানুষ অন্তত কিছু ধানচাল, গবাদিপশু বাঁচানোর চেষ্টা করতে পারে। ফ্লাশ ফ্লাডে এরকম করার কোন সুযোগ নেই। মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে উঠে দেখবেন যে বিছানা পর্যন্ত পানি উঠে গেছে, হুড়মুড় করে ঘরের চালে উঠে প্রাণ বাঁচাতে হবে।
প্রবল বৃষ্টি, ঘুটঘুটে অন্ধকারে আমাদের মানুষ কোনরকমে টিকে আছে ঘরের চালে, বড় গাছের ডালে। বাবার হাত ছেড়ে সন্তান হয়তো ভেসে যাচ্ছে, বৃদ্ধ আর অসুস্থরা হয়তো ঘর থেকেই বেরুতে পারেননি। আর সারাদেশ অসহায়ের মতো সারারাত দোয়া করছে, রাত জাগছে দুশ্চিন্তায়। অল্প উদ্ধারকাজ চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এই প্র্যাকটিসের অবসান ঘটা দরকার। মানলাম যে আগের সরকার ভারতপন্থি ছিল, তাই তাঁরা শক্ত প্রতিবাদ করতে পারেনি। আশাকরি নতুন সরকার একটি শক্ত প্রতিবাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন।
ফেনী সহ দুর্গত অঞ্চলের জন্য প্রার্থনা।