আকস্মিক বন্যায় ৬ জেলায় মোট ১ লাখ ৮৯ হজার ৬৬৩টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ১৭ লাখ ৯৬ হাহার ২৪৮ জন।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল ১০টা পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় তার প্রতিবেদনে ৬ জেলার চিত্র তুলে ধরেছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী-আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোর ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
গত ২০ আগস্ট থেকে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদন।
এতে উল্লেখ করা হয়, বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ৬টি (কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার), ৪৩ উপজেলা বন্যা প্লাবিত, ৬ জেলায় মোট ১ লাখ ৮৯ হজার ৬৬৩টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ১৭ লাখ ৯৬ হাহার ২৪৮ জন। বন্যার পানিতে ডুবে ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলায় ১ (এক) জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পানিবন্দি বা ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয় দেয়ার মোট ১ হাজার ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট ১৭ হাহার ৮৮২ জন লোক আশ্রয় নিয়েছে। ৩ হাজার ৪৮৬টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। ৬ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য মোট ৩০৯টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে নগদ অর্থ, শুকনা ও অন্যান্য খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের সকল জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে বলেও জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে সমন্বয় করে এক সাথে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে। ফেনী জেলায় বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। সেনাবাহিনী থেকে ১৬০ জন সদস্য ৪০টি উদ্ধারকারী যান ফেনী জেলায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ১টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে।
নৌবাহিনীর ৭১ জন সদস্য ও ৮টি উদ্ধারকারী যান কাজ করছে। এছাড়া বিজিবিসহ আরও নৌযান আনানো হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।