Homeবাংলাদেশআগামী মাস থেকে পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু

আগামী মাস থেকে পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু

বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে বিশ্ব ব্যাংকের প্রিতিনিধি দলের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আপনি যে দোকানে যাচ্ছেন সে দোকান থেকে পলিথিন ব্যাগ কিনে আনছেন। আমি-আমরা-আপনি সবাই পলিথিন ব্যাগকে ‘না’ বলুন। পলিথিন ব্যাগ দিচ্ছেন কেন, এটা তো নিষিদ্ধ এ কথাটা বলুন। আমরাও তো হাতে করে নিয়ে আসি। মার্কেটগুলোতে গিয়ে পলিথিন ব্যাগগুলো নিয়ে এই কথাগুলো বলুন প্রথমে, সবাই ১৫ থেকে ২০ দিন এইগুলো বলুন। তারপর আমরা অভিযানে যাবো।
পলিথিনের বিরুদ্ধে কবে থেকে অভিযান শুরু হবে-সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারিখ নির্ধারিত হয়নি। কারণ এরসঙ্গে আরও কয়েকটি সংস্থা সম্পৃক্ত। এখন সবাই একটা আন্দোলনের মুডে আছে। সবাই সবার দাবি পেশ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওইদিকে ব্যস্ত আছে। তবে আগামী মাসের মধ্যেই আপনারা (সাংবাদিকদরা) কার্যক্রমের শুরু দেখতে পাবেন।

নতুন করে আর কোনো ইটভাটার অনুমোদন দেয়া হবে না। অবৈধ ইটভাটাগুলোর ক্ষেত্রে মৌসুম আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে না। তার আগেই এগুলো বন্ধ করা যায় কিনা দেখা হবে।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ অধিদফতরের কিছু কিছু প্রকল্পে সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক-সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের প্রত্যাশাটা কী এবং এ প্রত্যাশাটা আমরা যত তাড়াতাড়ি পূরণ করতে পারব, ততো তাদের পক্ষে সম্ভব হবে এ অন্তর্বর্তী সরকারকে; এ প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে বাজেট সহায়তা দেয়ার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আইন-কানুন, নীতি ভালো আছে। এগুলোকে আরও ভালো করা যায়। কিন্তু সক্ষমতা না বাড়ালে এগুলোর বাস্তবায়নের জন্য দূরত্বটা বেড়ে যাবে। মানুষের প্রত্যাশার জায়গাটা পূরণ হবে না। আইন-কানুন, নীতি আমরা আরও সময়োপযোগী আরও শক্ত করা হবে। কিন্তু একই সাথে কাজেও নেমে যেতে হবে। যেমন মানুষকে দেখাতে হবে যে দূষণকারী কয়জন শাস্তি পাচ্ছে, ময়লা আবর্জনা নদীর পাড় থেকে সরছে। তবে কিছু কিছু নদী পরিস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের কাছে নতুন করে প্লাস্টিক, পলিথিন, শব্দদুষণ ও কয়েকটা নদী দূষণ নিয়ে কথা হয়েছে।

বিশ্বব্যাংক কী ধরনের সহায়তা দেবে-এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন,
পরিবেশ অধিদফতরকে সবচেয়ে দূষিত নদী ও দূষণকারীদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। সেগুলো যখন আমরা পাবো, তখন একটি মনিটরিং প্ল্যান করা যাবে। ফলে বিস্তারিত রুপরেখা তৈরি হয়নি। তবে একটি রুপরেখা তো আছেই, সেখানে নতুন নতুন কম্পোনেন্ট যদি যুক্ত করতে পারি, সেটি নিয়ে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছে সর্বাত্মক সহায়তা করার চেষ্টা করবে।

দেশের বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, বায়ুদূষণ একদিনে সমাধান হবে না। কিন্তু এ শীতের আগে যেন বায়ুদূষণের কয়েকটি উৎসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি সেজন্য বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। নির্মাণকাজের আর অনুমোদন দেয়া হবে না, যদি তারা বায়ুদূষণ প্রশমনের পরিকল্পনা ও টাকা যদি না দেখায়। সেগুলো মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা কথা বলতে পারি বলেও জানান তিনি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, দেশে মেগা প্রকল্প চলছে-কিন্তু বায়ুদূষণ রোধের ব্যবস্থা নেই, সেই জায়গাটাতে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করা হবে। কনস্ট্রাকশন হবে, কিন্তু বায়ুদূষণ করে কনস্ট্রাকশন হতে পারবে না। স্বল্প ব্যয়েই বায়ুদূষণ করা সম্ভব বলেও আমি মনে করি।

তিনি ফের বলেন, অবৈধ ইটভাটাগুলোর ক্ষেত্রে আমরা ইট তৈরির মৌসুম আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাচ্ছি না। তার আগেই এগুলো আমরা বন্ধ করতে পারি কিনা, সেটা দেখা হবে।

অবৈধ ইটভাটা বন্ধের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
যাদের লাইসেন্স বা ছাড়পত্র নেই সেগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। তারা বায়ুদূষণ করুক বা উন্নয়নের প্রয়োজন হোক বা না হোক, তাদেরকে তো বন্ধ করতে হবে। কারণ তাদের তো কোনো অনুমোদন নেই। আশাপাশের দেশেও মাটি দিয়ে পোড়ানো ইট নেই। ব্লক ইট প্রস্তুতে যে উপাদানগুলো লাগে সেগুলো আমদানির বিষয় আছে। অবৈধ ইটভাটার ক্ষেত্রে কোনো সহানুভূতি দেখানো হবে না। সেগুলো বন্ধ হলে উন্নয়নে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করি না। আমরা নীতিগত একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে আমারা আর কোনো নতুন ইটভাটার লাইসেন্স দেয়া হবে না। তারপরের কাজ যেগুলো অবৈধ সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। তারপরের কাজ হচ্ছে সরকারে কী পরিমাণ ইট লাগে, সেগুলোর বিকল্প কী হতে পারে সেটি খুঁজে বের করা। যারা ব্লক ইটে যেতে চান, তাদের কীভাবে প্রণোদনা দেয়া যায়, সেটি দেখা হবে।

সর্বশেষ খবর