কোটা সংস্কার ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন মোকাবিলায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছিল বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় ছিলেন। জুলাই মাসের শুরুর দিকে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে ঘিরে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এক পর্যায়ে শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ওঠে। ছাত্র-জনতার এ বিক্ষোভ দমনের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘অপ্রয়োজনীয়’ ও ‘মাত্রাতিরিক্ত’ বলপ্রয়োগের গুরুতর ও বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে জানায়, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বাধ্য করা হয়। একে ঘিরে গত কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভে ৪৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য অপ্রয়োজনীয় বলপ্রয়োগ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ আন্দোলন দমনের জন্য আইনশৃঙ্ক্ষলা বাহিনী আন্দোলনকারীদের বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচারে গ্রেফতার ও আটক, জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও দুর্ব্যবহার এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।
এ অবস্থায় জাতিসংঘ বাংলাদেশে দ্রুত আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়। এছাড়াও দেশে আরও প্রাণহানি, সহিংসতা এবং প্রতিশোধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়া হয়।
এক দফা আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট শপথ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনিসহ উপদেষ্টা পরিষদে এখন ২১ জন সদস্য রয়েছেন।
শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি এবং আন্দোলনে যে সহিংসতা চালানো হয়েছে তা তদন্তের জন্য জাতিসংঘকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।