১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওতায় বিচার করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমনটি জানান।
এমনকি এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে বিগত প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়া ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঘটনায় যত মিথ্যা মামলা করা হয়েছে, দ্রুতই তা প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। অর্থপাচারের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে কোনো অপরাধের বিচার করার ইচ্ছা ও উদ্দেশ্য আমাদের আছে। আমাদের দেশের ব্যাংক ও সম্পদ লুটপাট করে নিয়ে যাবে, এটা তো আমার-আপনার টাকা। সাবেক সরকারের মন্ত্রীদের টাকা না।
‘জনগণের টাকা যারা নিয়ে গেছেন, তাদের অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করা ও বিচারের সম্মুখীন করার জন্য যতটুকু করা দরকার, অবশ্যই আমরা করবো।’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেয়ায় ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যতগুলো মামলা হয়েছে, সবগুলো প্রত্যাহার করা হবে বলেও জানান এ উপদেষ্টা। বলেন, ঢাকা শহরে যে মামলাগুলো হয়েছে বৃহস্পতিবারের মধ্যে সবগুলো প্রত্যাহার করা হবে। আর সারা দেশের মামলা ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে।
‘এছাড়া সব নিবর্তনমূলক আইনও বাতিল কিংবা সংশোধন, যেটা করা দরকার, সেটা করা হবে।’সাগর-রুনি হত্যার বিচার গতি পাবে কি না- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘অবশ্যই, আপনারা রাজপথে থেকে আমাদের চাপে রাখবেন। এই বিচার না হলে জাতির কাছে আমরা দায়ী থাকবো। আমি বিশ্বাস করতে পারি না, এমন একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে কীভাবে প্রহসন করা হয়।’
সংবিধান সংশোধনের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে অনেক দাবি আছে। কিন্তু আমরা এখনো এ বিষয়ে কোনো জবাব দিতে পারবো না। এটা আমার এখতিয়ারাধীন বিষয় না। আমরা উপদেষ্টা পরিষদে এ বিষয়ে আলোচনা করবো।’
বিচার বিভাগ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়কে যে সহযোগিতা করতে হয়, সেটা আমরা সম্পন্ন করেছি। এরই মধ্যে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিরা নিয়োগ পেয়েছেন।’
‘আমরা এমন একজন প্রধান বিচারপতি পেয়েছি, যিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করেছেন। এখান থেকে আপনারা বুঝে নেবেন, আমরা কীসের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। যোগ্যতা ও সততার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। আগে যারা প্রধান বিচারপতি ছিলেন, তাদের সিভি, আর বর্তমান প্রধান বিচারপতির সিভি তুলনা করলে বুঝতে পারবেন, আমরা কীসের ওপর জোর দিচ্ছি’ যোগ করেন আইন উপদেষ্টা।