বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক দফার মুখে পতন ঘটে শেখ হাসিনা সরকারের। সরকার পতনের পর আগুন দেওয়া হয় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বাড়িতে। সে সময় পুড়ে যায় জলের গান ব্যান্ডের গায়ক রাহুল আনন্দের ভাড়া বাড়িটিও। রাহুল আনন্দের বাড়িটি পুড়ে যাওয়ায় সামাজিক মাধ্যমে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা।
কেউ বলছেন রাহুল আনন্দ সাম্প্রদায়িকতার শিকার হয়েছেন। তবে রাহুল আনন্দের স্ত্রী উর্মিলা শুক্লা বলছেন ভিন্ন কথা।
শুক্লা লিখেছেন, ‘বাইরে জনতার বিজয় মিছিলের চিৎকার। হঠাৎ দেখলাম পিছনের সবগুলো বাড়িতে আগুন। আমরা মুহূর্তেই দিশেহারা হয়ে পড়লাম। বুঝলাম ৩২ এর সবগুলো বাড়িতেই আগুন লাগানো হয়েছে। আমাদের বাড়িটা সান্তুর রেষ্টুরেন্টের পিছনে। পাশে আমাদের বাড়িওয়ালা জনাব আইনুল হক-এর তিনতলা বাড়ি, সেখানে প্রথম ভাঙচুর হয় ও আগুন দেয়। যখন সান্তুরের গেইট দিয়ে উল্লাসে জনতা ঢুকে পড়েছে আর সান্তুরে আগুন ধরাচ্ছে তখন আমরা বুঝতে পারছিলাম না কি করবো। আমার যে ঘরভর্তি বাদ্যযন্ত্র। তাদেরকে বুঝানোর জন্য এগিয়ে গেলাম পরিবারের সবাই। তারা তখন ৩২ ধ্বংসের উল্লাসে কোনো কিছুই শোনার চেষ্টা করেনি। তবে কিছু মানুষ এগিয়ে এসেছিলো….তারা চেয়েছিলো অন্যদের বুঝাতে…কেউ কারো কথা শোনার মতো অবস্থায় ছিলো না। একজন বললো – ১৪ বছরের রাগ…এই এলাকা ধ্বংস করবেই। ..বরং আপনাদেরকে আমরা সাবধানে বের করে দিচ্ছি… আপনারা এখান থেকে চলে যান’।
তিনি লিখেছেন, ‘৩২ ধ্বংস করার উন্মাদনায় আমার ঘর পুড়ে গিয়েছে। শুধু আমার নয় আমাদের বাড়ির মালিকের ঘরও পুড়েছে। আশপাশের আরো কিছু বাড়ি ঘরও পুড়েছে। আর কারো কোন ক্ষতি না হোক’।
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি অনেকবার কিছু লিখতে চেয়েছি…. কিন্তু কান্নায় আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে….আমি কোনো কিছু বলার মতো অবস্থায় নাই… তারা কেউ নির্দিষ্ট করে আমাদের বাড়ি পুড়াতে চায়নি…চেয়েছে ৩২ এর এই বাড়িগুলো ধ্বংস করতে। আমাদের তো সব গেছে, মানসিকভাবে আমরা বিধ্বস্ত… আমাদের বাস্তবতা আশা করি সবাই বুঝবেন’।
পরিশেষে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ সুন্দর হোক। সুন্দর হোক আগামীর পথচলা। আমরা সবাই মিলেই বাংলাদেশ’।