গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দানবে পরিণত করেছিল এ মন্তব্য করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, যারা এরজন্যে দায়ী তাদের দ্রুত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের আওতায় আনা হবে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুর পৌনে ১২টায় ঢাকার পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দফতরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিজিবি সদস্যদের খোঁজ-খবর নেয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি এসব বলেন।
এ সময় তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,
সীমান্তে বিজিবি আর পিঠ দেখাবে না। অতিসত্তর দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা হবে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দানবে পরিণত করেছিল। যারা এরজন্যে দায়ী তাদের দ্রুত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
আর পুলিশ বাহিনীতে দলীয়করণের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কাজ হচ্ছে- রাষ্ট্রপতির কাছে তালিকা পাঠানো, তা করা হয়েছে। পুলিশ খুবই অনুতপ্ত। তাই মানবিক পুলিশ তৈরিতে পুলিশ কমিশন তৈরির চিন্তা ভাবনা চলছে।
তিনি আরও বলেন,
পুলিশরা ভবিষ্যতে যেন মানবিক পুলিশ হয়, সেজন্য আমরা পুলিশ কমিশন গঠনের চিন্তাভাবনা করছি। পুলিশ সদস্যরাও বলেছেন, পুলিশ কমিশনের অধীনে থাকতে চায় তারাও। রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হতে চায় না।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না উল্লেখ করে ১৫ আগস্টে যে কোনো সহিংসতা রুখে দিতে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি থাকবে বলে নিশ্চিত করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পুলিশের যোগদান সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন,
সবাই যোগ দিচ্ছেন। আগামী বৃহস্পতিবার বলতে পারব কতজন আসছেন, কয়জন আসেননি। আর আপনারা তো দেখছেন, পুলিশ আমার সঙ্গে আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সব কিছুর একটা প্রসেস আছে। আমি লিস্ট করছি। যাদের অন্যায়ভাবে বের করা হয়েছে, আবার যারা এরমধ্যেই ছিল না। আপনারা যাদের কথা বলছেন সেটা আমরা দেখব। তবে আমরা খুঁজছি, বের করার চেষ্টা করছি, হুকুমের আসামিদের।
তিনি আবারও বলেন, যাদের কথা বলা হচ্ছে, তাদের সবার লিস্ট আমাদের কাছে আছে। ২/১ দিনের মধ্যে আপনারা অ্যাকশন দেখবেন। আমি তো এটার মালিক না। চাইলেই সাইন করতে পারি না। দুটো ধাপ পার হতে হবে। আজ বা কালকের মধ্যে আপনারা খবর জেনে যাবেন। মাঠের কাজ প্রায় শেষ।
সাম্প্রতিক সহিংসতায় সব থেকে আলোচনায় ছিল আইন-শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ওপর রাজনৈতিক দলের হস্তক্ষেপ। যার পরিণতি তাদের ওপর আস্থা হারিয়েছে জনগণ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তাই অন্যতম চ্যালেঞ্জ এ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থা ফেরানো।