পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে দুই ছাত্রসহ তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (১২ আগস্ট) রাতে আন্দোলনে গুলিতে নিহত পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র জাহিদুল ইসলামের বাবা মো. দুলাল উদ্দিন মাস্টার বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার হুকুম দেওয়ার অভিযোগ ওঠা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদরের ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খানকে। এছাড়া সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্সসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাসহ ১০৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ৪ আগস্ট বেলা সোয়া ১১টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভে নামে। পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের প্রধান ফটকের সামনে থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা শহরের ট্রাফিক মোড় বর্তমান শহীদ চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে দুই ছাত্রসহ তিনজন নিহত ও অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
ঘটনার সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ওই গাড়ি থেকে নেমে দুই ব্যক্তি ছাত্রদের লক্ষ্য করে প্রকাশ্যে গুলি ছোড়েন। ঘটনায় নিহত দুইজন হলেন জেলা সদরের চর বলরামপুর গ্রামের দুলাল উদ্দিন মাস্টারের ছেলে ও পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম (১৮) এবং হাজিরহাট বেতেপাড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে ও শহরের সিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র মাহবুব হাসান নিলয় (১৪)। অপরজন ফাহিম হোসেন রাজ্জাক।
মামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, রাতে বাদী থানায় হাজির হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। আমরা মামলা নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছি। তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।