শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি।।
মাত্র ৭ দিনের মাথায় আবারও ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পেলেন নাজমুল আলম খোকন। বৃহস্পতিবার বেলা ৩ টায় তিনি এই দায়িত্ব ভার গ্রহণ করেন। খোকন জানান আদালতের নির্দেশে তিনি আবারও এই ক্ষমতা পেয়েছেন। তবে এই ঘটনাকে জবরদস্তি ও বেআইনী বলে দাবি করেছন সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র জানে আলম খোকা।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, শেরপুর পৌরসভার সান্যালপাড়া এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হক লুলু ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে তিনি পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির ২১টি অভিযোগ তুলে ধরেন। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে কিছু অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় গত ১২ মে তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করে প্যানেল মেয়র নাজমুল আলম খোকনকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে ধুনট মোড়ে দোকানঘর বরাদ্দ ও জমি লিজের ৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরোজ মুজিব ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফিরোজ উদ্দীন আহমেদ জুয়েলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জানে আলম খোকা ও ফিরোজ উদ্দীন আহমেদ জুয়েলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ মে মন্ত্রণালয়ের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত রাখেন আদালত। সেই সঙ্গে তাঁদের দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ জুলাই মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলে ৪ জুলাই মেয়রের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন জানে আলম খোকা। এর ঠিক ৭ দিনের মাথায় আবারও ভারপ্রাপ্ত পৌর মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেলেন নাজমুল আলম খোকন।
নাজমুল আলম খোকন জানান, সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র জানে আলম খোকার আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আপীল করা হয়। বুধবার স্থগিত আদেশের রায়টি স্থগিত রাখে আদালত। সেই সাথে পরবর্তী শুনানীর জন্য আগামী ১২ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়।
তবে এই বিষয়টি অবৈধ ও জবরদস্তি মূলক বলে দাবি করেছেন জানে আলম খোকা। তিনি বলেন, “আমি ২১ মে আদালতের রায় পেয়েছিলাম। কিন্তু দায়িত্ব ফিরে পাওয়ার জন্য ৩ জুলাই মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। এসব কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই নামুল আলম খোকন আজ চেয়ারে বসেছেন। আদালতের রায় বা মন্ত্রণালয়ের কোন চিঠি আমাকে দেখানো হয়নি।“
এবিষয়ে শেরপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ও ভারপ্রাপ্ত পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়জুল ইসলাম বলেন,”আমি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ছটিতে আছি। তাই নাজমুল আলম খোকন কোন প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন আমি তা অবগত নই।“
এ বিষয়ে বগুড়া জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচলাক মাসুম আলী বেগ বলেন,”নাজমুল আলম খোকনকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব ও আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছ। আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে জানে আলম খোকা তার দায়িত্ব ফিরে পেয়েছিলেন। যেহেতু আপীলের প্রেক্ষিতে আদালত তার ওই রায় স্থগিত করেছেন, নাজুমল আলম খোকনের দায়িত্ব ভার গ্রহণ করতে আইনগত কোন বাধা নেই।“