আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার নিয়ে চাপে থাকলেও জো বাইডেন শেষ পর্যন্ত নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন না বলে মনে করেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (৮ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের টিভি চ্যানেল ফক্স নিউজকে টেলিফোনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন,
আমি তাকে (বাইডেন) জানি। তার ইগো সমস্যা রয়েছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরবেন না। তিনি মূলত আমাকে পরাজিত করতে চাচ্ছেন।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট এবং দলের জ্যেষ্ঠ নেতা হওয়ায় ডেমোক্রেটিক পার্টিতে বাইডেনের অবস্থান বেশ শক্তিশালী। তা ছাড়া দলে তার ভক্ত-অনুসারী ও প্রতিনিধিদেরও অভাব নেই। তাই তিনি নিজে থেকে না চাইলে, নির্বাচনী দৌড় থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া অসম্ভব। এমনকি সংবিধাানের ২৫ নম্বর ধারাও এক্ষেত্রে কোনো কাজে আসবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারা অনুসারে, প্রেসিডেন্ট যদি কোনো কারণে কারো সিদ্ধান্তকে পাত্তা না দেয়া শুরু করেন, সেক্ষেত্রে ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরা একজোট হয়ে প্রেসিডেন্টকে তার পদ ও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার মতো সক্ষমতা রাখেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস বা শীর্ষস্থানীয় ডেমোক্র্যাটরা বিকল্প এই পদক্ষেপে এগোবেন এমন কোনো ইঙ্গিতও নেই।
সমালোচনা যেন পিছু ছাড়ছে না মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে ট্রাম্পের বিপরীতে নড়বড়ে উপস্থাপনার পর চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ডেমোক্র্যাটদের কপালে। এরপর নিজের সাফাই গেয়ে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিলেও সন্তুষ্ট করতে পারেননি নিজ দলকে। প্রশ্ন উঠেছে, জো বাইডেন আগাম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আদৌ যোগ্য কি না। বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বর্তমানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে বাইডেনকে সরানোর লাভক্ষতি বিবেচনা করছে ডেমোক্র্যাটরা।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসে মস্তিষ্ক-জনিত রোগ পারকিনসনের এক বিশেষজ্ঞকে ঘন ঘন যাতায়াত করতে দেখা যাচ্ছে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একের পর এক অদ্ভুত কর্মকাণ্ডের জন্য তার মানসিক সুস্থতা নিয়ে তীব্র সমালোনার মুখে পড়েছেন। সোমবার (৮ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব ধোঁয়াশা দূর করেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কেরিন জিন-পিয়ার।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি হাসপাতালের পারকিনসন রোগের এক চিকিৎসককে গত বছর থেকে এ পর্যন্ত আটবার হোয়াইট হাউসে ঢুকতে দেখা গেছে।
এ প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের দৈনিক সংবাদ সম্মেলনে কেরিন জিন-পিয়ারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, চিকিৎসকের গোপনীয়তা রক্ষা এবং নিরাপত্তার স্বার্থে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না।
এ সময় তাকে সাংবাদিকরা দুইটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে। এক, বাইডেনের মস্তিষ্ক-জনিত রোগ পারকিনসনের চিকিৎসা করা হয়েছে কিনা এবং এ রোগের চিকিৎসা চলছে কিনা। এ দুটি প্রশ্নের জবাবেই কেরিন কেবল ‘না’ বলে উত্তর দেন।
গত ২৭ জুন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নেন ডেমোক্রেটিক নেতা জো বাইডেন এবং রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বিতর্কে বাইডেনের ভরাডুবির পর তার বয়স এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আগামী নির্বাচনের জন্য কতটুকু সমর্থ তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এমনকি বাইডেনের নিজের দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্যরাই এখন সংশয় প্রকাশ করেছেন যে, আসলেই কি জো বাইডেন একটু বেশিই বুড়িয়ে গেছেন কিনা।