রাম মন্দির নির্মাণ, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের অগ্রাধিকার দেয়ার মতো নানা রকম ধর্মীয় মেরুকরণের অভিযোগ থাকার পরও ১৪০ কোটি মানুষের দেশ ভারতের তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় বিজেপি শাসিত এনডিএ সরকার। সদ্য সমাপ্ত ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ৪০০ আসনের বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরলে দেশটি হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হতো বলেও বিরোধীরা অভিযোগ করে আসছেন। এবার সেই অভিযোগের গায়ে শিলমোহর দিলেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. অমর্ত্য সেন।
বরাবরই বিজেপির কট্টর সমালোাচক হিসেবে পরিচিত অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন। হিন্দুত্ববাদ, বেকারত্ব, ধর্মীয় মেরুকরণ ছাড়াও প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার মান উন্নয়নসহ নানা ইস্যুতে দিনকে দিন নোবেল বিজয়ীর কঠোর সমালোচনার মুখে বিজেপি।
প্রায় ছয় মাস ইউরোপে থাকার পর সম্প্রতি কলকাতায় ফিরে বিমানবন্দরেই বিজেপির বিরুদ্ধে কার্যত বোমা ফাটিয়েছিলেন প্রবীণ অর্থনীতিবীদ। এবার আরও একধাপ এগিয়ে দেশের হিন্দুত্ববাদে সমর্থকদের খোঁচা দিয়েছেন অমর্ত্য সেন। বলেছেন, হিন্দুরাষ্ট্র করার চেষ্টা পুরোপুরি রোখা যায়নি। তবে আপাতত থামিয়ে দেয়া হয়েছে।
নিজের দাতব্য সংস্থা প্রতীচীর ‘কেন স্কুলে যাই- সহযোগিতার সহজ পাঠ’ শীর্ষক এক সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে দেশের সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থার কড়া সমালোচনা করেন নোবেল বিজয়ী।
এরপর উপস্থিত সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বিজেপির হিন্দুত্ববাদ নিয়ে বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করেন। দেশের সাধারণ মানুষকে ধর্মীয় মেরুকরণে প্রলুব্ধ না হওয়ারও আহ্বান জানান। রাম মন্দির প্রসঙ্গেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদ।
নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের মধ্য দিয়ে ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র করার প্রচেষ্টা কিছুটা আটকানো গিয়েছে। মানুষ এবার আর বিজেপির ধর্মান্ধতার পক্ষে রায় দেয়নি।
অমর্ত্য সেন পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনের বাসিন্দা। বেশ কয়েক বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তার পৈর্তৃক বাড়ি নিয়ে আইনি জটিলতায় ভুগছেন। যদিও অমর্ত সেনের পক্ষে দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন এবং আইনিভাবেও সহায়তা করছেন। এতে করে অমর্ত্য সেনের বিজেপির বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনাকে অনেকেই রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখছেন বলে মনে করা হয়।