ফ্রান্সের কাছে টাইব্রেকারে হেরে ইউরো থেকে বিদায় নিয়েছে পর্তুগাল। পুরো টুর্নামেন্টে কোনো গোল না পেয়েই আসর শেষ করলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। লম্বা ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম কোনো মেজর টুর্নামেন্টে গোলশূন্য থাকার অভিজ্ঞতা হলো পর্তুগিজ মহাতারকার। পর্তুগালের বাদ পড়ার দিনে অনেকেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে সিআরসেভেনের শেষ দেখে ফেললেও ভিন্ন কথা জানিয়েছেন কোচ রবার্তো মার্টিনেজ।
নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়। রোনালদোর ক্ষেত্রে সম্ভবত এই কথাটিই সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক। বয়সের ভার কিংবা অফফর্ম; রোনালদো যে আর মাঠে আগের মতো দাপিয়ে বেড়াতে পারছেন না। ইউরোতে তার পারফরম্যান্সে সেই বিষয়টা একদম পরিষ্কার।
২১ বছরের ক্যারিয়ারে প্রথম কোন মেজর টুর্নামেন্ট শেষ করলেন গোলশূন্য অবস্থায়। লক্ষ্যের উদ্দেশ্যে মোট ১০টি শট নিয়ে একবারও পেলেন না জালের দেখা। ইউরোর ইতিহাসে এত বেশি শটের পরেও গোল না পাওয়ার যৌথ সর্বোচ্চ রেকর্ড এটা। আগেরটা ২০১৬ সালে বেলজিয়ামের কেভিন ডি ব্রুইনার।
এবারের ইউরোর পাঁচ ম্যাচসহ শেষ ৯ ম্যাচে গোলহীন রোনালদো। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রোনালদোর ভবিষ্যৎ নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে তো বিদায়ই জানিয়ে দিচ্ছেন ৩৯ পেরোনো এই তারকাকে। তবে এখনও এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন পর্তুগালের কোচ রবার্তো মার্টিনেজ।
ফ্রান্স-পর্তুগালের এই ম্যাচটাই রোনালদোর শেষ ম্যাচ ছিল কিনা, ম্যাচ শেষে এমন প্রশ্নের উত্তরে মার্টিনেজ বলেন, ‘ম্যাচ শেষ হওয়ার পরপরই এটা নিয়ে কথা বলাটা একটু আগেভাগেই হয়ে যায় এবং ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’
তারকাবহুল স্কোয়াড থাকার পরেও এবারের ইউরোতে তেমন আলো ছড়াতে পারেনি পর্তুগাল। এমন ব্যর্থতায় অনেকে দায় চাপাচ্ছেন অফফর্মে থাকা রোনালদোর দিকে। কেউ দাবি করছেন স্কোয়াড ঢেলে সাজানোর। তবে স্রোতের ঠিক উল্টো দিকে পর্তুগাল বস। অভিজ্ঞ আর তারুণ্যের মিশেলে, এই দলটাকে ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা বলে দাবি তার।
এ প্রসঙ্গে মার্টিনেজ বলেন, ‘আমি তরুণ ফুটবলারদের পরিপক্ব হতে দেখেছি, আমি দেখেছি অভিজ্ঞরা কিভাবে সঠিক পরামর্শ দিচ্ছে। সবাই দলের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি খুবই গর্বিত এগুলো নিয়ে। এটা খুবই যোগ্যতাসম্পন্ন ড্রেসিং রুম। ক্যারিয়ারে পাওয়া সবগুলো ড্রেসিং রুমই ভিন্ন। অবসরের পর একদিন এগুলো নিয়ে তুলনা করব। কিন্তু এই মুহূর্তে, আমি আসলে খুবই গর্বিত খেলোয়াড়দের নিয়ে এবং তারা যা করেছে।’
আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখনই ইতি না টানলেও ইউরোতে এটাই ছিল রোনালদোর শেষ ম্যাচ। স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচে মাঠে নামার আগে নিজেই সেটা জানিয়েছেন রোনালদো, ‘কোনো সন্দেহ নেই অবশ্যই এটাই শেষ (ইউরো। তবে আবেগ ছুঁয়ে যাচ্ছে না। ফুটবলের সবকিছুই আমাকে প্রভাবিত করে। খেলাটির প্রতি এখনো আমার যে উৎসাহ, দর্শকের আগ্রহ, পরিবারকে পাওয়া, লোকজনের ভালোবাসা…ব্যাপারটা আসলে ফুটবল–বিশ্ব ছেড়ে যাওয়া নয়। আমার জেতার বা করার জন্য আর কীই-বা বাকি আছে?’