বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফিরে স্বপ্নের মতো সময় কাটাচ্ছেন বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা। ট্রফি প্যারেড শেষে, আইকনিক ওয়াংখেড়েতে পৌঁছে বন্দে মাতরম ধ্বনিতে চ্যাম্পিয়ন স্বত্তার জানান দেন বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যরা। এরপর সংবর্ধনা মঞ্চে উঠে আরও একবার ট্রফি জয়ের অনুভূতিটা প্রকাশ করেন কোহলি। পুরো দলসহ প্রশংসায় ভাসেন অধিনায়কের। আর ট্রফিটা পুরো ভারত জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন বিশ্বকাপজয়ী ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা।
শুধু একটা বিশ্বকাপ শিরোপার জন্যে তীর্থের কাঁকের মতো অপেক্ষা। নিজের ক্যারিয়ার শেষে বিদায়টা যেন হয় তৃপ্ত হয়ে, শেষটা যেন হয় অমরত্বের সুধা পান করেই। সেই প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি যখন মিলে যায় তখন যেন স্বর্গ সুখ আচ্ছন্ন করে রাখে, বিহ্বল হয়ে পড়েন আনন্দ অশ্রু ধারায়।
হয়তো আক্ষেপ সঙ্গী করেই ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট থেকে বিদায় নিতে হতো কিং কোহলিকে। কিন্তু রাজা তো রাজাই। রাজার বেশেই ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা বাগিয়ে নিয়ে ইতি টানলেন বিরাট। আর বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফেরার পর যা হলো তা হয়তো কল্পনাতীতই ছিল টিম ইন্ডিয়ার কাছে। রূপালি ট্রফিটা উচিয়ে ছাঁদ খোলা বাসে চড়ে, ৩২,৮৭,২৬৩ বর্গকিলোমিটারের ভারতীয় আকাশ বাতাসকে প্রকম্পিত করে বীরদর্পে তারা জানান দেন, ইন্ডিয়া বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। আর সেই উদযাপনটা পূর্ণতা পায় আইকনিক ওয়াংখেড়েতে রোহিত বাহিনীর পদচারণায়।
ওয়াংখেড়ের সংবর্ধনা মঞ্চে উঠে আরও একবার স্বপ্নের মতো এই সময়টাকে ব্যাখ্যা করেন কোহলি। ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতলেও এবারের অনুভূতিটা যে একেবারেই ভিন্ন জানান নিজেই। শুধু নিজের অনুভূতিই না, অধিনায়ক রোহিতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথাও বলেন কোহলি। সঙ্গে ভূয়সী প্রশংসায় ভাসান চমক দেখানো জাসপ্রিত বুমরাহকে।
কোহলি বলেন, ‘২০১১ সালে এই মাঠে যখন বিশ্বকাপ জিতেছিলাম, খুব আনন্দ হয়েছিল। তখন আমার বয়স ২১ অথবা ২২। তখন দলের সিনিয়রদের কান্নার গুরুত্ব বুঝতে পারিনি। মনে আছে শচীন টেন্ডুলকরকে কাঁধে নিয়ে ঘুরেছিলাম আমরা। তাও মনে হয়েছিল, আমরা তো সহজেই বিশ্বকাপ জিতলাম। এবার উপলব্ধি করলাম একটা বিশ্বকাপ জেতা কতটা কঠিন। নিজে কেঁদে বুঝলাম ২০১১ সালে সিনিয়ররা কেন কেঁদেছিলেন। আমি যখন অধিনায়ক ছিলাম, তখন রোহিত আমার দলের অন্যতম সিনিয়র ক্রিকেটার ছিলেন। এখন ও অধিনায়ক। আমি দলের অন্যতম সিনিয়র। আমরা সব সময় স্বপ্ন দেখেছি দেশকে বিশ্বকাপ জেতানোর। না পারলেও চেষ্টা থামাইনি।’
শুধু কোহলিই না, মাইক্রোফোন হাতে আবেগে ভেসেছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। কখনো করেছেন স্মৃতিচারণ, কখনো আবার বুঁদ হয়েছেন দর্শকদের ভালোবাসায়।
রোহিত বলেন, ‘আমরা যখন ইন্ডিয়ায় ফিরে এলাম সেটা অবিশ্বাস্য ছিল। আমরা যে সংবর্ধনা পেয়েছি সেটা ছিল উদ্যমী। এই ট্রফিটা অবশ্যই আমাদের জন্য, তবে এই ট্রফির দাবিদার পুরো ভারত। আমি দলটা নিয়ে গর্ব করি। দলের জন্য ওরা যেকোনো সময় সব কিছু করতে পারে।’
এর আগে ভারতে ফিরে নানা আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রফি সমেত দেখা করে চ্যাম্পিয়ন দল। তারপর বীরের বেশে ফেরেন ওয়াংখেড়েতে।