খেলার শুরুতেই ডেনমার্কের জালে বল পাঠিয়েও গোল পায়নি জার্মানি। এরপর একের পর এক আক্রমণের ঢেউ আছড়ে পড়ে ডেনমার্কের রক্ষণদেয়ালে। নিজেদের গুছিয়ে পাল্টা আক্রমণে জবাব দিচ্ছিল ডেনমার্কও। এরই মধ্যে প্রকৃতি বাধ সাধে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাতে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। ফলে স্থগিত হয়ে যায় ম্যাচ। এরপর ফের খেলা গড়ালে ডেনমার্কের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে জয় পেয়েছে জার্মানি।
ডর্টমুন্ডে শনিবার (২৯ জুন) ডেনমার্ককে ২-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে স্বাগতিক জার্মানি। কাই হাভার্টজের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর জামাল মুসিয়ালার গোলে জয় নিশ্চিত হয় জার্মানির।
এদিন শেষ ষোলোর দ্বিতীয় ম্যাচটি মাঠে গড়ানোর ৩৬ মিনিটের মাথায় স্থগিত হয়ে যায়, তখনও কোনো পক্ষই গোল করতে পারেনি।
তার আগে বৃষ্টির মাঝেই খেলা চলছিল। তবে প্রচণ্ড বজ্রপাত এবং বৃষ্টির তেজ বাড়তে থাকলে রেফারি খেলা বন্ধ করে দেন। খেলোয়াড়রা কিছুক্ষণ সাইডলাইনে অপেক্ষা করেন। এরপর দুই দলই টানেলে চলে যায়।
তবে ২৫ মিনিট পরেই ফের খেলা মাঠে গড়ায়।
এদিন বলের দখলে এগিয়ে ছিল জার্মানরাই। ৫৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে ১৫টি শট নেয় তারা, যার ৯টি লক্ষ্যে ছিল। বিপরীতে ডেনমার্কের ১১টি শটের দুটি লক্ষ্যে ছিল। দুর্দান্ত ডিফেন্ডিংয়ে ডেনমার্ককে গোলবঞ্চিত করে ম্যাচসেরা হয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ডিফেন্ডার অ্যান্টনি রুডিগার।
এদিন ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই ডেনমার্কের জালে বল পাঠিয়েছিলেন জার্মানির নিকো শ্লটারবেক। কিন্তু তার ঠিক আগের মুহূর্তে ফাউলের শিকার হন ডেনমার্কের আন্দ্রেস অলসের। এরপরের ছয় মিনিটে জার্মানদের তিনটি দারুণ আক্রমণ নস্যাৎ করে দেয় ডেনমার্ক। এরপর ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে আক্রমণে মন দেয় ডেনিশরা।
এই অর্ধের বিরতির ঠিক আগে ডেনমার্ক সেরা সুযোগটা পায়। কিন্তু ডি-বক্সে ঢুকে একা গোলরক্ষককে পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেদের স্ট্রাইকার রাসমুস হয়লুন্দ।
গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ফের আক্রমণে জার্মানি। হাভার্টজের শট অল্পের জন্য ঠেকান ডেনিশ গোলরক্ষক, শ্লটারবেকের প্রচেষ্টা অল্পের জন্য ব্যর্থ হয়। ৪৮ মিনিটে জটলার মধ্য থেকে জার্মানির জালে বল পাঠান ইওয়াখিম আন্দেরসন। কিন্তু সেই গোল বাতিল করেন রেফারি। এর তিন মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় জার্মানি।
ডেনিশদের বক্সের ভেতর আন্দেরসনের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পটকিকে বল জালে পাঠান হাভার্টজ।
৫৯ মিনিটে মাঝমাঠে এক ছোঁয়ায় দারুণভাবে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্প্রিঙতে সবাইকে পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে লক্ষ্যভষ্ট শট নিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন হাভার্টজ। এর সাত মিনিট পর সহজ সুযোগ নষ্ট করেন হয়লুন্দ।
এর ঠিক পরপরেই ব্যবধান বাড়ান মুসিয়ালা। নিজেদের ডি-বক্সের সামনে থেকে হাওয়ায় ভাসিয়ে লম্বা থ্রু বল বাড়ান শ্লটারবেক। বলের পেছনে দৌড়ে সবাইকে হারিয়ে বল প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে গোল করেন বায়ার্ন মিউনিখের তারকা। এবারের আসরে ৩ গোল নিয়ে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা মুসিয়ালা। ৩ গোল করেছেন জর্জেস মিকাউতাদজেও।
এই জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে জার্মানি।