নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় এবার যুক্তরাষ্ট্রকে একহাত নিলো পাকিস্তান। এ ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি প্রস্তাব পাস করেছে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ ও পাকিস্তানের পার্লামেন্ট। নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কাউকে হস্তক্ষেপ করতে দেয়া হবে না বলে সতর্ক করেছে ইসলামাবাদ।
নানা নাটকীয়তার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে কারাগারে রেখেই পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রধানমন্ত্রী পদে বসেন পিএমএলএনের নেতা শাহবাজ শরিফ। তবে বরাবরই ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পিটিআই নির্বাচনী সহিংসতা, ভোট জালিয়াতি, নিজেদের কর্মীদের ধরপাকড়, ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া, বিধিনিষেধ আরোপসহ নানা অভিযোগ করে আসছে।
এবার দেশটির ওই নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে খোদ যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি এ বিষয়ে বুধবার (২৬ জুন) মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়। প্রস্তাবটিতে নির্বাচনে কথিত অনিয়মের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসলামাবাদ। শুক্রবার (২৮ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে একটি পাল্টা প্রস্তাব পাস করেছে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে।
এদিন ওয়াশিংটনের পদক্ষেপকে প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারো হস্তক্ষেপ মেনে নেয়া হবে না বলেও সাফ জানানো হয়। নির্বাচনী তদন্তের পরিবর্তে গাজা ও কাশ্মীরের মানবিক সংকটের প্রতি মনোযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন পাকিস্তানের পার্লামেন্ট সদস্যরা।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সাম্প্রতিক প্রস্তাবের জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আলোচনার জন্য জাতীয় পরিষদের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।
নির্বাচনী হস্তক্ষেপের বিষয়ে পাকিস্তানের প্রতিবাদ পার্লামেন্টেই সীমাবদ্ধ থাকেনি সতর্ক করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও। পাকিস্তান গঠনমূলক আলোচনায় বিশ্বাসী হলেও জাতীয় স্বার্থকে আঘাত করলে তা বরদাশত করবে না হবে না বলে জানান মন্ত্রণালয়ে মুখপাত্র।
এতে ওয়াশিংটন-ইসলামাবাদ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি। একই সুরে কথা বলেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ।
যুক্তরাষ্ট্রের পাসকৃত প্রস্তাবের সমালোচনা করে তিনি বলেন, পাকিস্তান নয় দেশটির বরং নিজেদের আসন্ন নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে কাজ করা উচিত। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান গাজা সংঘাত নিয়ে, ইসরাইলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনসহ অতীতে বিদেশি সরকারগুলোকে ক্ষমতা থেকে অপসারণে জড়িত থাকার সমালোচনাও করেন খাজা আসিফ।
এ অবস্থার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাহবাজ সরকার। এতে মাসুদ খানের স্থলাভিষিক্ত হবেন কূটনীতিক রিজওয়ান সাঈদ শেখ।