Homeঅর্থনীতিমুদ্রাস্ফীতির কারণে গরুর মাংস খাওয়া কমিয়েছেন যে দেশের মানুষ

মুদ্রাস্ফীতির কারণে গরুর মাংস খাওয়া কমিয়েছেন যে দেশের মানুষ

দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারণে হিমশিম খাচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা। এবার দেশটির মানুষ এসব কারণে গরুর মাংসের ব্যবহার কমিয়েছে অন্তত ১৬ শতাংশ।

শনিবার (২২ জুন) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। কাবাবের দোকান, বিস্তীর্ণ গবাদি পশুর খামার এবং আসাডো বারবিকিউর জন্য বিখ্যাত ফুটবলের দেশ আর্জেন্টিনা। গরুর মাংসের প্রতি এ জাতির রয়েছে এক আলাদা আকর্ষণ। আর্জেন্টাইনদের বাড়িতে বাড়িতে গরুর মাংস পোড়ানো বা গ্রিলের জন্য রয়েছে আলাদা স্থান। পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে খেলা দেখা আর গরুর মাংসের গ্রিল করে খাওয়া তাদের এক সংস্কৃতিরই অংশ। এমনকি রাজধানী বুয়েনস আয়ার্সে রাস্তার কোণায় কোণায় দেখা যায় স্টেক হাউজ, যেখানে হরহামেশাই আর্জেন্টাইনদের দেখা যেত ভিড় করতে।

তবে এখন দেশটির অর্থনীতি প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। দারিদ্রতা বেড়েছে দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম প্রধান এই দেশটির। প্রধান শহরগুলোতে আরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই মুদ্রাস্ফীতি এবং আরও নানাবিধ কারণে পতনের দিকে দেশটির অর্থনীতি। চলতি বছর প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেইয়ের কঠোর ব্যবস্থার পরও, মূল্যস্ফীতি ৩০০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই আর্জেন্টাইনরা তাদের খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনছেন।

৪৮ বছর বয়সী কৃষি প্রকৌশলী লুইস মার্চি বলেন, ভোক্তারা গরুর মাংসের বদলে অন্যান্য সস্তা খাবার যেমন, মুরগী, শূকরের মাংস এবং পাস্তার দিকে ঝুঁকছেন।

৫৩ বছর বয়সী চাষি গুইলারমো ট্রামন্টিনি নামের একজন বলেন, গরুর মাংস খুব বেশি দামিও নয়। কিন্তু মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ভয়ানকভাবে হ্রাস পেয়েছে। তাই এই মাংস খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন।

বুয়েনস আয়ার্সে ৪০ বছর ধরে নিজের কসাইখানা চালাচ্ছেন জেরার্ডো টমসিন। ৬১ বছর বয়সী টমসিন বলেন, যদিও লোকেরা এখনও গরুর মাংস কিনতে আসছেন। কিন্তু তারা এই মাংস কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন।

এদিকে দেশটির স্থানীয় মানুষরা গরুর মাংস কমিয়ে দেয়ায়, স্বাভাবিকভাবেই দেশটির উৎপাদিত এ মাংসের রফতানি বেড়েছে। তবে, আন্তর্জাতিক বাজারে এ মাংসের দাম নিয়েও সংকট দেখা দেয়ায়, বর্তমানে কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির মুক্ত বাজার অর্থনীতিবিদ মাইলি।

এবছর একজন আর্জেন্টাইন ৪৪ কেজি হারে গরুর মাংস আহার হিসেবে নিয়েছেন, যেখানে গত বছর এর পরিমাণ ছিল ৫২ কেজি। ১৯৫০ সালে প্রত্যেক আর্জেন্টাইনের জন্য বছরে ১০০ কেজির মতো গরুর মাংসের প্রয়োজন পড়তো।

Exit mobile version