পাল্টাপাল্টি বেলুন চালাচালি চলছে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে। পিয়ংইয়ংয়ের আবর্জনাভর্তি বেলুনের জবাবে এবার সিউল পাঠাচ্ছে লিফলেট এবং স্পিকারসম্বলিত বিশেষ ধরনের ‘স্মার্ট বেলুন’। কিন্তু কীভাবে প্রস্তুত হয় এ বেলুন, কারাই-বা এগুলো তৈরি করেন — সেটাই সম্প্রতি সামনে এসেছে দেশটির এক অ্যাক্টিভিস্ট দল ‘দ্য কমিটি ফর রিফর্ম অ্যান্ড ওপেনিং আপ জোসন’-এর প্রকাশিত এক ভিডিওতে।
কোরীয় উপদ্বীপে চলমান উত্তেজনা কিছুতেই যেন কমছে না। দুদেশের এ বেলুনকাণ্ড গণমাধ্যমের একটা আলোচ্য ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। গেলো মাস থেকে উত্তর কোরিয়া দফায় দফায় আবর্জনাভর্তি শত শত বেলুন পাঠায় দক্ষিণ কোরিয়ায়। এর জবাবে দক্ষিণের একদল অ্যাক্টিভিস্ট এবার পাঠাচ্ছে অভিনব এক ‘স্মার্ট বেলুন’, যা উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় শত শত লিফলেট ছড়িয়ে দিতে সক্ষম। এসব লিফলেটে রয়েছে দেশটির শাসক কিম জং উন বিরোধী বিভিন্ন বার্তা। এছাড়াও রয়েছে স্পিকার এবং জিপিএস ট্র্যাকার।
কিন্তু কীভাবে বানানো হয় এ স্মার্ট বেলুনগুলো? দক্ষিণের ওই অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপের বরাতে জানা যায়, বিশেষ এ বেলুনগুলোর একেকটির পেছনেই খরচ হয় প্রায় এক হাজার ডলার। হিলিয়াম কিংবা হাইড্রোজেন গ্যাসবাহী এ বেলুন সাড়ে সাত কেজি পর্যন্ত ওজন তুলতে সক্ষম। ঝড়ো বাতাসসহ বিভিন্ন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও এরা ১৫০০টি লিফলেট বিতরণ করতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ‘দ্য কমিটি ফর রিফর্ম অ্যান্ড ওপেনিং আপ জোসন’র এক সদস্য বলেন, ‘এখনো আমাদের সরকার থেকে বেলুন পাঠানো বন্ধের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি। আর আমাদের থামা উচিতও নয়। নিজেদের স্বাধীনতা সম্পর্কে জানার অধিকার উত্তর কোরিয়ার মানুষের আছে।’
সিউলে ভাড়া করা একটি ছোটো অ্যাপার্টমেন্টে কাজ করে অ্যাক্টিভিস্ট সংগঠনের ৩০ সদস্যের এ দল। থ্রিডি প্রিন্টারের সাহায্যে বেলুনের সঙ্গে যুক্ত মালবাহী বক্স এবং অন্যান্য অংশ প্রস্তুত করা হয়। চীনা এং দক্ষিণ কোরীয় ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে প্রয়োজনীয় ডিভাইস কেনা হয়। বেলুনের সঙ্গে যুক্ত বক্সে রাখা হয় লন্ঠন আকৃতির স্পিকার ডিভাইসও। বেলুনগুলোর মূল লক্ষ্য পিয়ংইয়ংয়ে পৌঁছানো। ২০২২ সাল থেকে ছাড়তে শুরু করা বেলুনগুলো সীমান্তের কয়েক ডজন কিলোমিটার দূর পর্যন্ত যেতে পারে।