দেশের তৈরি পোশাক খাতে নামমাত্র প্রবৃদ্ধি থাকলেও লক্ষ্যমাত্রার আশপাশে নেই গত ১১ মাসের অর্জন। খাতভিত্তিক সরকারের দূরদর্শী নীতি-কৌশলের অভাবকে দায়ী করছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। আর বৈশ্বিক অস্থিরতা, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহারের চাপ মোকাবিলা করে আগামীতে ভালো করতে হলে সরকারকে উদ্যোক্তাদের পাশে থাকার তাগিদ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।
বছরজুড়ে ৫ হাজার ২২৭ কোটি ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গত মে পর্যন্ত ১১ মাসে তৈরি পোশাক শিল্পের ঘরে এসেছে ৪ হাজার ৩৮৫ কোটি ডলার। লক্ষ্য পূরণে চলতি মাসে আসতে হবে আরও ৮৪২ কোটি ডলার। যা প্রায় অসম্ভব; কারণ এর আগে কোনো এক মাসে সর্বোচ্চ আয় এসেছে গত জানুয়ারিতে; ৪৯৭ কোটি ডলার।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরে পোশাক খাতের জন্য ১১.২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হলেও মে-পর্যন্ত অর্জন ২.৮৬ শতাংশ। অথচ আগের অর্থবছর ৪ হাজার ৬৮০ কোটির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এ খাতের আয় এসেছিল ৪ হাজার ৬৯৯ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি ছিল ০.৪১ শতাংশ বেশি।
এরপরও উদ্যোক্তারা বলছেন, সঠিক পথেই চলছে পোশাক খাত। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে খাত ভিত্তিক সম্ভাবনা, গবেষণা আর দিকনির্দেশনা নিয়ে পাশে থাকতে হবে সরকারকে।
বিজিএমইএর সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, এ খাতের প্রবৃদ্ধি অজর্নে রোডম্যাপ তৈরি করে কাজ করতে হবে। এজন্য সরকারকে গবেষণা ও দিকনির্দেশনা বাড়াতে হবে।
আশাভঙ্গের এমন চিত্র যখন তুলে ধরছে ইপিবি; তখন আবার ক্রলিং পেগের নামে ডলারের দাম আর অর্থনীতিকে ঠিক করতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে ব্যাংক ঋণে সুদহারের লাগাম। সেই সঙ্গে রয়েছে জ্বালানি সংকটের ভোগান্তি।
এসব থেকে মুক্তি না পেলে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কঠিন হবে বলে সতর্ক করছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবির বলেন,
বর্তমানে চাপের মধ্যে রয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। যার প্রভাব পড়ছে দেশের তৈরি পোশাক খাতেও। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা প্রয়োজন।
লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় পোশাক খাতের এমন হতাশাজনক আয়ের প্রতিচ্ছবি রয়েছে পুরো রফতানি আয়ের ক্যানভাসে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলার ধরা হলেও গত মে পর্যন্ত ১১ মাসে রফতানি আয়ে এসেছে ৫১ হাজার ৫৪২ দশমিক ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।