নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে মৃত্যুর ৪৪ দিন পর বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে কবর থেকে এক ব্যক্তির লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। মৃত ঐ ব্যক্তির নাম ফয়জার রহমান (৪৫)।
রোববার (৯ জুন) সকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যিাজিস্ট্রেট তাহমিদুল ইসলাম, ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশের উপস্থিতিতে উপজেলার বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের গনাইর কুটি গ্রাম থেকে লাশটি উত্তোলন করেন।
মামলার বিবরণে জানাগেছে, গত ১৮ এপ্রিল’২৪ বানুর কুটি গ্রামে জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের আঘাতে ফয়জার রহমানসহ আরো দুই ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়। আহত অবস্থায় তাদেরকে এলাকাবাসী উদ্ধার করে ঐদিনই ভূরুঙ্গামারী হাসপাতালে ভর্তি করে। গত ২০ এপ্রিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে সুস্থ্যতার (ফয়জার) ছাড়পত্র প্রদান করে। বাড়ি আসার পর পুনরায় অসুস্থ্য হয়ে পরেন এবং গত ২৫ এপ্রিল মৃত্যু বরণ করেন। এব্যাপারে গত ১ মে নিহত ফয়জারের ছেলে হাফিজুর রহমান ভূরুঙ্গামারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রট, আমলী আদালত, ভূরুঙ্গামারী থানা, কুড়িগ্রাম , ১৫ মে এক আদেশে দাফনকৃত লাশ কবর থেকে উত্তোলনের নির্দেশ দেন।
প্রত্যেক্ষদর্শীদের বর্ণনামতে, ফয়জার রহমান ২৫/০৪/২৪ইং তারিখে যথারীতি ব্রিজের দক্ষিণে বোল্ডার বানানোর কাজ করতে এসে বেলা আনুমানিক ১:৩০ টায় হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।
অভিযুক্ত সালেহ্ আকরাম (৪৭) জানান, গত ১৮/০৪/২৪ইং তারিখে আমার ভাতিজা লুৎফর রহমান (২২) এর সাথে মামলার বাদী হাফিজুর রহমান এর সাথে জমাজমি নিয়ে বিতর্ক ও ধাক্কাধাক্কি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাদী হাফিজুর রহমান ও তার মা জায়েদা খাতুন এবং তার বাবা ফয়জার রহমান ভূরুঙ্গামারী হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু, বাদীর পিতা ফয়জার রহমান সম্পূর্ণ সূস্থ্য থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১৮/০৪/২৪ইং তারিখেই সূস্থ্যতার ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাকী দু’জনেরও তেমন কোন অসূস্থতা না থাকায় ২০/০৪/২৪ইং তারিখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ছাড়পত্র প্রদান করে। তারপর থেকে তারা সম্পূর্ণ রুপে সূস্থ্য থাকায় ফয়জার রহমান নিয়মিতভাবে দুধকুমার ব্রিজের দক্ষিণ পার্শ্বে শ্রমিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২৫/০৪/২৪ইং তারিখ বেলা ১:৩০টায় প্রচন্ড তাপদাহে আক্রান্ত হয়ে সে কর্মরত অবস্থায় হার্ট অ্যাটাকে মৃতু্বরণ করেন। এলাকাবাসী ও তার আত্নীয়-স্বজন প্রশাসনকে অবগত না করে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে দাফনকাজ সম্পন্ন করে।
সালেহ্ আকরাম আরও জানান যে, গত ৩০/০৪/২৪ ইং তারিখে বিকেলে ১০০ জন ভাড়াটিয়া জনতা নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা ও আমার নিজ নামে রেকর্ডকৃত জমিতে লাগানো ১০০টি সুপারি গাছ ও দু’টি কাঠাল গাছ কেটে ফেলে। এই দায় এড়ানোর জন্য ২৫/০৪/২৪ইং তারিখে দাফনকৃত ফয়জার রহমানকে খুন করা হয়েছে বলে কোন সঠিক তদন্ত ছাড়াই আমাকে ১নং আসামী করে একটি মিথ্যে হত্যা মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নম্বর- ৭৮/২৪, তারিখ ০১/০৫/২৪ইং।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুল ইসলাম জানান, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে এবং বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কুড়িগ্রাম কতর্ৃক আদেশ প্রাপ্ত হয়ে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে লাশটি কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হবে। ওসি রুহুল আমিন জানান, বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট পাবার পর প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।