ভারতের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে দলের বড় জয়ের পর একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা ব্যানার্জি। বলেছেন, ‘শিগগিরই কেন্দ্রের ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে চলে যেতে পারে। কখনও কখনও সরকার শুধু একদিন টেকে।’
নরেন্দ্র মোদির টানা তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার আগের দিন শনিবার (৮ জুন) তৃণমূল সংসদীয় দলের বৈঠকের পর মমতা এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, তার দল মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেবে না। কারণ এই সরকার ‘অবৈধ ও অগণতান্ত্রিকভাবে’ গঠন করা হচ্ছে।
এবারের নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী সরকার গঠন করতে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং বিজেপিকে মিত্রদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কারণ মোদির দল বিজেপি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। দলটি পেয়েছে ২৪০টি আসন। কিন্তু সরকার গঠন করতে প্রয়োজন ২৭২টি আসন। হিসেব মতে, ৩২টি আসন কম রয়েছে বিজেপির ঝুলিতে।
২০১৪ সাল ও ২০১৯ সালের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর এবারের বিজেপির পরিস্থিতি নিয়ে খোঁচা মারতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘যারা ৪০০ আসন পাওয়ার কথা বলেছিল, তারা এমনকি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতেও ব্যর্থ হয়েছে। ইন্ডিয়া জোট সরকার গঠন করা নিয়ে কোন কিছু দাবি করেনি বলে ভাববেন না যে কিছু হবে না। কখনও সরকার একদিন স্থায়ী হতে পারে। যে কোন কিছু ঘটতে পারে। কে জানে, এই সরকার ১৫ দিনও স্থায়ী হবে কিনা!’
সমাজবাদী পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেস এবং ডিএমকের মতো মিত্র দলগুলোর শক্তিশালী ফলাফলের জন্য ইন্ডিয়া জোট লোকসভার ২৩২টি আসন পেয়েছে এবারের নির্বাচনে। তৃণমূল কংগ্রেস সংসদের চতুর্থ বৃহত্তম দল। তবে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটও সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় আসন পায়নি।
সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়া বা এনডিএ মিত্রদের কাছ থেকে বিজেপিকে সমর্থনের চিঠিও ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের এই ইঙ্গিত দেয়া থামাতে পারেনি যে, তারা সরকার গঠন করতে পারে। এমনকি কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বৃহস্পতিবার জোটের বৈঠকের পরে বলেছিলেন, ‘বিজেপির শাসনে না থাকতে চাওয়ার জনগণের আকাঙ্খা উপলব্ধি করতে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেবে ইন্ডিয়া জোট।’
রোববার (৯ জুন) মোদির শপথ অনুষ্ঠান নিয়ে মমতা বলেন, ‘আমরা তাদের শুভকামনা জানাতে সেখানে যাব না। কারণ তারা ‘বেআইনি ও অগণতান্ত্রিকভাবে’ সরকার গঠন করছে। আমরা শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রণ গ্রহণ করিনি এবং আমরা যাবো না।’
তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২৯টিতে জয়লাভ করেছে।