ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের নেতা হিসেবে তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। রোববার (৯ জুন) তিনি ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ গ্রহণ করবেন। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াসহ এরই মধ্যে বিশ্বের বহু দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান মোদিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
মোদির শপথগ্রহণে যোগ দিচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুসহ সাত দেশের সরকার প্রধান। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান এখনও মোদিকে অভিনন্দন জানায়নি। যদিও পাকিস্তানের সদ্য গঠিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন মোদি।
বিষয়টি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মুখ খুলেছে ইসলামাবাদ। কেন এখনও মোদিকে অভিনন্দন জানায়নি, সেই প্রসঙ্গের পাশাপাশি ফের কাশ্মীর ইস্যু তুলে ধরেছে পাক কর্তৃপক্ষ।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালুচ শনিবার (৮ জুন) সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, আমরা তাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
তিনি আরও বলেন, যেহেতু নতুন সরকার এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণ করেনি, তাই এখনই ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো নেহাতই ‘অকালীন’ হয়ে যাবে।
পাশাপাশি তিনি জানান, পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখতে আলোচনার পক্ষপাতী। তার কথায়, ‘জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে সমস্যাসহ সমস্ত অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা ধারাবাহিকভাবে গঠনমূলক আলাপ-আলোচনার কথা বলছি।
জম্মু-কাশ্মীর সমস্যাসহ অন্যান্য বিষয়ি নিয়ে পাকিস্তান বরাবরই আলোচনার কথা বলে আসছে। বিপরীতে ভারত বারবার স্পষ্ট করেছে সন্ত্রাস বন্ধ না করলে কোনো আলোচনা নয়।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার দরজা কখনও বন্ধ করিনি। কিন্তু কথা হচ্ছে, কীসের আলোচনা? যদি ওখানে সন্ত্রাসবাদীদের বহু শিবির থেকেই যায়, তাহলে সেটাই তো কথোপকথনের মূল বিষয় হওয়া উচিত।’
টানা দেড় মাসের ভোটগ্রহণ শেষে গত মঙ্গলবার (৪ জুন) ফলাফল ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কমিশন। বুথফেরত জরিপে লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে ৩৫০টিরও বেশি আসনের পূর্বাভাস দেয়া হলেও বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স বা এনডিএ ২৯২টি আসন জিতেছে। অন্যদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২৩৩টি আসন।
আগের দুই মেয়াদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া বিজেপি এবার এককভাবে ২৪০টি আসন পেয়েছে। সরকার গড়তে ২৭২টি আসন প্রয়োজন। তাই এবার সরকার গঠনের জন্য জোটের শরিকদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে মোদিকে। শুক্রবার (৭ জুন) এনডিএ জোটের নেতা হিসেবে মোদিকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
রোবাবার (৯ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ নেবেন মোদি ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা। সেই লক্ষ্যে নয়াদিল্লিতে ব্যাপক আয়োজন চলছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ও মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ যুগনাথের এদিন শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এছাড়াও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।