বলিউড অভিনেত্রী ও বিজেপির নেত্রী কঙ্গনা রানাউতকে থাপ্পড় মেরে শাস্তির মুখে পড়েছেন চণ্ডীগড় বিমানবন্দরের নারী নিরাপত্তারক্ষী কুলবিন্দর কাউর। তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সাসপেন্ডের পর করা হয়েছে গ্রেফতারও।
তবে এরপরও দমছেন না এই নিরাপত্তাকর্মী। এবার তিনি বললেন, মায়ের সম্মান রক্ষার জন্য এমন হাজারও চাকরি হারাতে পারি আমি।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) চণ্ডীগড় এয়ারপোর্টে সিআইএসএফ কনস্টেবল কুলবিন্দর কাউরের হাতে চড় খান সদ্য নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাউত। কৃষক আন্দোলনের সময় বেফাঁস মন্তব্যের জেরেই এই চড় বলে জানান কুলবিন্দর। এই ঘটনায় ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ পাশে দাঁড়িয়েছেন কঙ্গনার, কেউ আবার সমর্থন করছেন ওই নারী নিরাপত্তাকর্মীকে।
তবে কঙ্গনার পাশে দাঁড়ায়নি তার নিজের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিও। এমনকি উল্টে খ্যাতনামা সংগীত শিল্পী বিশাল দাদলানি বলেছেন, ওই কনস্টেবল যদি চাকরি হারান তাহলে তাকে চাকরি দেবেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি আরও লেখেন, ‘আমি কখনও হিংসাকে সমর্থন করি না। তবে আমি এই সিআইএসএফ কর্মীর রাগের কারণটা বুঝতে পারছি।’
বলিউডের এমন আচরণে রেগে লাল কঙ্গনা। প্রতিক্রিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন,’আমার প্রিয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, বিমানবন্দরে আমার ওপর হামলার পর আপনারা সবাই হয় উদযাপন করছেন না হয় একেবারে চুপচাপ বসে আছেন।
‘তবে একটা কথা মনে রাখবেন, আগামীকাল যদি আপনি আপনার দেশের রাস্তায় বা এই পৃথিবীর কোথাও কোনও অস্ত্র ছাড়াই ঘুরে বেড়ান, আর তখন কোনও ইসরাইলি বা ফিলিস্তিনি আপনাকে এবং আপনার সন্তানদের ওপর আক্রমণ করার চেষ্টা করে, শুধু এই কারণে, তখন আজকের দিনটি মনে করবেন, যোগ করেন তিনি। তবে কিছুক্ষণ পরই সেই পোস্ট ডিলিট করে দেন তিনি।
কুলবিন্দরকে বৃহস্পতিবারই আটক করা হয়েছে। তার নামে দায়ের হয়েছে এফআইআরও। এরপর তাকে সাসপেন্ড করা হয় এবং পরবর্তীতে গ্রেফতারও করা হয় তাকে। কঙ্গনাকে চড় দেয়ার ঘটনায় কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত সোশ্যাল মিডিয়া।
কঙ্গনাকে চড় মারার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন ওই নারীর পেশাদারিত্ব নিয়ে। অনেকে ওই তাকে সাপোর্টও করেছেন। অনেকেই চিন্তিত তার চাকরি নিয়ে। তবে কুলবিন্দর শুক্রবার (৭ জুন) নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘আমার নিজের চাকরির চিন্তা নেই। মায়ের সম্মানের জন্য এমন হাজারও চাকরি হারাতে পারি।
প্রতিবেদন মতে, ভারতে ২০২০-২১ সালের কৃষক বিক্ষোভের সময় আন্দোলনে অংশ নেয়া পাঞ্জাবের নারীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন কঙ্গনা। এক নারী বিক্ষোভকারীর ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছিলেন, ‘এই নারীকে ১০০ রুপিতে পাওয়া যায়।’ মূলত এ কারণেই পাঞ্জাবের অধিবাসী ও সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) সদস্য কুলবিন্দর কঙ্গনার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) কুলবিন্দরের বিরুদ্ধে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কঙ্গনাকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে। এরপর তাকে বহিষ্কার ও পরে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের হয়েছে। ঘটনা তদন্তে এরই মধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে সিআইএসএফ কর্তৃপক্ষ।
কুলবিন্দর পাঞ্জাবের সুলতানপুর লোধির বাসিন্দা। তিনি দুই বছর ধরে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তার স্বামীও সিআইএসএফের সদস্য। এছাড়া কুলবিন্দরের ভাই শের সিং একজন কৃষকনেতা। তিনি কিষান মজদুর সংগ্রাম কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক।